ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

হিলিতে ভারতীয় ট্রাকচালকদের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে না

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৩ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার | আপডেট: ১১:৪৬ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার

ভারতে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সেই ভারত থেকে দেশে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও করোনা টেস্ট করা হলেও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালকদের করোনা পরীক্ষার আওতায় আনা হয়নি। এতে করে দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতীয় ট্রাক চালকদের করোনা পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন স্থানিয় জনগণ এবং বাংলাদেশি ট্রাক চালকরা।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ১৮০ থেকে ২শ পণ্যবাহী ট্রাকের সাথে সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ জন চালক সহকারী দেশে প্রবেশ করছে। যাদের কাউকেই করোনার পরিক্ষার আওতায় আনা হয়নি। এদিকে করোনার কারণে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে যাত্রী যাওয়া বন্ধ রয়েছে তবে ভারত থেকে মাঝে মধ্যে ২/৪জন পাসপোর্ট যাত্রী দেশে ফিরছেন। 

ভারতীয় ট্রাক চালক নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। কিন্তু না আমাদের ভারতে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে না। বাংলাদেশে করোনার পরীক্ষা করা হচ্ছে না। যেহেতু করোনা অনেকাংশে বেড়ে গেছে যার কারনে আমরা খুব আতংকের মধ্যে রয়েছি।

অপর ট্রাকচালক অনিল কুমার বলেন, ভারতীয় ট্রাক চালকরা ভারত থেকে রফতানিকৃত পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে এসেছি খালাস করতে। ইতোমধ্যেই ভারতে ব্যাপকহারে করোনা বেড়ে গেছে যার কারণে আমরা আতংকের মধ্যেই রয়েছি কিন্তু ভারত থেকে রফতানিকৃত পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের আগে ভারতে আমাদের কোন করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে না আবার ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছি এখানেও কোন পরীক্ষা করা হচ্ছে না। শুধুমাত্র মাস্ক পড়ে গাড়িতে স্যানিটাইজড করতিছে এভাবেই কার্যক্রম চলছে। এবার কার মধ্যে করোনা আছে সেটাতো বুঝা যাচ্ছে না আমার মধ্য দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসতে পারে আবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে যেতে পারে তাই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতো।

বাংলাদেশি ট্রাক চালক সাগর খান বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে করোনা খুব বেড়ে গেছে কিন্তু ভারত থেকে যেসব ট্রাক আসছে তাদের চালকরা কোন স্বাস্থ্যবিধি মানছে না আমাদের বাংলা ট্রাকের চালকরা যারা পণ্য নিতে আসছে তারাও কেউ কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। ভারতীয় চালকরা বন্দরে আসছে তাদের কোন প্রকার করোনা টেস্ট করা হচ্ছে না তারা আমাদের বাংলা চালকদের সাথে মিশছে শ্রমিকদের সাথে মিশছে তাই তাদের মাধ্যমে আমাদের ও শ্রমিকদের মাঝে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে এতে করে আমরা আতংকের মধ্যে রয়েছি। তাই তাদের যেন করোনা পরিক্ষার আওতায় আনা হয়, আলাদা রাখার ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।  

হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টে মেডিকেল টিমের স্বাস্থ্য সহকারি জাহাঙ্গির আলম বলেন, ভারত থেকে আগত প্রত্যেক পাসপোর্ট যাত্রীদের ৪৮ঘন্টার মধ্যে করোনার আরটিপিসিআর বা এন্টিজেন পরীক্ষার সনদ রয়েছে কিনা সেটি দেখছি। যাদের আরটিপিসিআর এর টেস্ট সনদ নেই তাদের ১৪দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। করোনার টিকা গ্রহন করেছেন কিনা সেটির সনদ দেখা হচ্ছে। তার শরীরে কোন ধরনের লক্ষ্যন রয়েছে কিনা যাদের এমন মনে হচ্ছে তাদের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের বিষয়ে ওমিক্রনে আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বেশী গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে সাথে সাথে তার করোনার এন্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে তাতে পজিটিভ আসলে আরটিপিসিআর টেস্ট করা হচ্ছে তবে এখন পর্যন্ত একটিও এই ধরনের পাওয়া যায়নি।তবে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালকদের কোন পরিক্ষা করা হচ্ছেনা।        
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বিগত দিনের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রফতানি করা হচ্ছে। ওমিক্রন  
ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করা মাত্রই প্রত্যেকটি গাড়িকে জীবানুমুক্ত করা হচ্ছে। সেই সাথে প্রত্যেক চালকদের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে। গাড়িতে রাখা পণ্যের কাগজপত্র নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে বিশেষ ঝুড়ির মাধ্যমে সংগ্রহ করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বন্দরের ভেতরে ট্রাক প্রবেশের পর আনলোড হওয়া পর্যন্ত চালকদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখা হচ্ছে আনলোড শেষে ট্রাকসহ তাদের আলাদা নির্দিষ্ট স্থানে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের জন্য আলাদা গোসলখানা আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা যেন সেই স্থান থেকে বের হতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের নিরাপত্তা প্রহরী দ্বারা নজরদাড়ি করা হচ্ছে। তবে ওমিক্রনের বিষয়ে একটি মিটিং হয়েছে কিন্তু সরকারি কোন নির্দেশনা পাইনি পূর্বের ব্যবস্থাপনায় বন্দর দিয়ে আমদানি রফতানি চালানো হচ্ছে। তবে ভারতে যেভাবে ওমিক্রন শুরু হয়েছে বাংলাদেশেও দিন দিন তা বাড়ছে এজন্য আমরা আতংকে রয়েছি। সরকারি কোন নির্দেশনা পেলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
কেআই//