ঢাকা, সোমবার   ০৬ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২২ ১৪৩১

জয়নুল আবেদিনকে ঘিরে সাংস্কৃতিক পল্লী নির্মাণের উদ্যোগ (ভিডিও)

ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:০৮ এএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার | আপডেট: ১১:১১ এএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র পাড়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালায় প্রতিদিনই ভিড় করছেন নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীসহ নানা বয়সি দর্শনার্থীরা। বিশ্বখ্যাত গুণী এই শিল্পীর শিল্পকর্ম দেখতে পেয়ে দারুণ খুশি তারা। তবে সংগ্রহশালাটির আধুনিকায়নের দাবি স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী ও চিত্রশিল্পীদের। আর সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলছেন, জয়নুল আবেদিনকে ঘিরে সাংস্কৃতিক পল্লী নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

জয়নুল আবেদিন বিংশ শতাব্দীর একজন বিখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী। বাংলাদেশে চিত্রশিল্প বিষয়ক শিক্ষার প্রসারে আমৃত্যু প্রচেষ্টার জন্য তিনি শিল্পাচার্য উপাধি লাভ করেন। জয়নুল আবেদিন ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার নেত্রকোণা মহকুমার কেন্দুয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। 

জয়নুল তাঁর তুলির আঁচড়ে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছিলেন গ্রাম-বাংলার আবহমান চিত্র, দুর্ভিক্ষসহ দুস্থদের জীবন সংগ্রাম। তাঁর বিখ্যাত চিত্রকর্মের মধ্যে রয়েছে দুর্ভিক্ষ-চিত্রমালা, মই দেয়া, সংগ্রাম, সাঁওতাল রমণী, ঝড়, কাঁক, বিদ্রোহী ইত্যাদি। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে গ্রামবাংলার উৎসব নিয়ে আঁকেন তার বিখ্যাত ৬৫ ফুট দীর্ঘ ছবি ‘নবান্ন’। 

জয়নুলের জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে ময়মনসিংহ শহরে। ব্রহ্মপুত্র নদের সাথে তার সম্পর্ক অনেক গভীর। জয়নুলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ব্রহ্মপুত্রের কূল ঘেষে নির্মাণ করা হয় জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা। এই গুণী শিল্পীর শিল্পকর্ম দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। 

দর্শনার্থীরা জানান, শিল্পাচার্যের আঁকা যে ছবিগুলো সেগুলো দেখার জন্য আসা। আধুনিকমানের সংগ্রহশালা হওয়ার জন্য এখানে আরও বড় ভবন, অডিটরিয়াম এবং আরও উন্নতমানের স্থাপনা করা দরকার।

জয়নুল সংগ্রহশালা আধুনিকায়নসহ সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলার দাবি স্থানীয় চিত্রশিল্পীদের। 

স্থানীয় চিত্ররশিল্পীরা বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আর্ট গ্যালারি থাকুক, শিশু শিল্পীরা বা যারা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারা যাইলেই যেন খুব সহজে একটা এক্সিভিশন করতে পারে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জানান, জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা ঘিরে সাংস্কৃতিক পল্লী গড়ে তোলার কথা। 

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘ছোট-বড় মিলিয়ে ৩টি অডিটরিয়াম থাকবে, মুক্ত মঞ্চ থাকবে। সবকিছু মিলিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন পরিকল্পনা হচ্ছে। শতবর্ষ পড়েও যেন সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় সেইটা ভেবেই আমরা পুরনো ও আধুনিকতার ছোঁয়া মিলিয়ে সেই ডিজাইনটা করছি।’

সাংস্কৃতিক পল্লী গড়ে তোলার খবরে খুশি স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মীরা। 

ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শাহাদাত হোসেন খান হিলু বলেন, ‘ময়মনসিংহের অধিবাসী যারা আছেন তাদের জন্য বড় ধরনের একটি প্রাপ্তি ঘটবে বলে আমি আশা রাখি।’

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ১৯৭৬ সালের ২৮ মে মৃত্যুবরণ করেন। 

এএইচ/