ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

শীত উপেক্ষা করে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:১৬ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৫:২১ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার

বরাবরের মতো বাংলার কৃষকরা এবছরও শীতকে উপেক্ষা করে বোরো আবাদ শুরু করেছেন। জমিতে সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ উঠানো ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপণে জোর কর্মতৎপরতা শুরু করেছেন যশোরের তিন উপজেলার কৃষকরা। সকালের কুয়াশা ঢাকা শীত উপেক্ষা করে সন্ধ্যা অবধি বোরোর জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কেউ বা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন। যশোরের শার্শা, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলায় এবার ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর, গরুর সাথে লাঙ্গল, মইজুড়ে জমি আবাদের উপযোগী করছেন। কেউ কেউ জমির আইলে কোদাল পাড়া কিংবা জৈব সার ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। আবার কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ করে পাম্পের বা শ্যালো মেশিন চালাচ্ছেন। আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে অনেকেই বীজতলা থেকে চারা তুলে তা রোপণ করছেন তাদের ক্ষেতে। পরিপূর্ণ শীতে মাঘ মাসের শুরুতেই যশোর অঞ্চলে ইরি-বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়। এবার আবহাওয়া ভালো হওয়ায় বেশ কৃষকেরা জমি তৈরিসহ নানা কার্যক্রম শুরু করেছেন।

যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলার শার্শা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে, ইতোমধ্যে আবাদ হয়েছে ২১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। ঝিকরগাছা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে, ইতোমধ্যে আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে, চৌগাছা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে, ইতোমধ্যে আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। 

শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, তার গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামের আবাদি জমির জন্য এরইমধ্যে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ইরি-বোরো বীজতলায় বীজ ছিটানো হয়েছে, যা আগামী ১ মাসের মধ্যে বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে লাগানো সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ইরি-বোরো বীজের মূল্য তাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। ফলে এলাকায় ইরি-বোরো বীজের কোনো সংকট নেই।

ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া গ্রামের কার্তিক দাস বলেন, বোরো ধান লাগাতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়। এছাড়া বোরো আবাদে খরচও বেশি হয়। বোরো ধান লাগানোর পর থেকে তিন-চার দিন পরপর সেচ দিতে হয়। আশা রাখি বোরো আবাদ হলে বেশি লাভবান হবো। তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবাদ করেছেন।

যশোরাঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, যশোরের তিন উপজেলায় ইরি-বোরো আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে। এরই মধ্যে ৫৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের এবং হাইব্রিড জাতের। এবছরও স্থানীয় জাতের আবাদ করছেন না কৃষকেরা। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৮০ ভাগ জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে বাকী আবাদ সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, আমনের উৎপাদন ভাল হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদিত ধানের বাজার মূল্য ভাল পাওয়ায় এবার কৃষকেরা উৎসাহ নিয়ে বোরো আবাদ শুরু করেছেন।
কেআই//