ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

তরুণরা কৃষিতে আসবে, আশা এসিআই অ্যাগ্রোর এমডির (ভিডিও)

মাহতাব মিনহাজ

প্রকাশিত : ০১:১৯ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০২:৩১ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার

বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও কৃষিনির্ভর। এ দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ্য-পরোক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। তবে বর্তমানে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও এখনও আমদানি নির্ভরতা কমেনি।
 
আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষির আধুনিকায়নের পাশাপাশি এই খাতের উন্নয়নে তরুণদের এগিয়ে আসার কথা বলেছেন কৃষি বিশেষজ্ঞ এফ এইচ আনসারী।  

দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠান এসিআই অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আনসারী সম্প্রতি একুশে টেলিভিশন অনলাইনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন। 

এফ এইচ আনসারী বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। গত ২২ বছর ধরে এসিআই গ্রুপের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

আমদানি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে কী করতে হবে- এমন প্রশ্নে তিনি একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, “নানা সংকট থাকলেও কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে। পাশাপাশি কৃষির আধুনিকীকরণও করতে হবে। আর কৃষির আধুনিকীকরণ করলে দেশের তরুণরা কৃষিতে আগ্রহ পাওয়ার পাশাপাশি যন্ত্রের ব্যবহারের কারণে উৎপাদনও বাড়বে এবং কৃষির প্রতি মানুষের অনীহা দূর হবে। ফলে যে আমদানি নির্ভরতা রয়েছে তা ধীরে ধীরে লাঘব হবে।’’

দেশের প্রাণিসম্পদের উচ্চমূল্য নিয়ে বিস্তর সমালোচনা রয়েছে। এক্ষেত্রে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। 

আনসারী বলেন, “আমাদের উন্নত ব্রিড, উন্নত খাবার ও খামার ব্যবস্থাপনার দিকে নিবিড়ভাবে নজর দিতে হবে। ক্যাটেলের পাশাপাশি মাছ ও মুরগির এফসিআর উন্নয়নের দিকেও নজর দিতে হবে । কারণ, আমাদের দেশে ১২ কেজি খাদ্যে এক কেজি গরুর মাংস উৎপাদন করা যায়, অথচ বেলজিয়ান ব্লু প্রজাতির ক্যাটেল থেকে ৪-৫ কেজি খাদ্য খেয়ে এক কেজি মাংস উৎপাদন করে এবং দুই বছরে একটি ক্যাটেল থেকে ২.৫ টন মাংস পাওয়া যায়।’’

বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশ এখন ‘জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকাল’ (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট) সুবিধা ভোগ করে চলেছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের এক প্রতিবেদনে (২৬ এপ্রিল ২০১৬) বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখন তরুণ জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্র। এ অঞ্চলের ৪৫টি দেশের জনসংখ্যাভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
 
ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির নিযুত সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এ দেশের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বোনাসকালের সুবিধা ভোগ করছে। ইউএনডিপির মতে, এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। 

এই সুবিধা কীভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে, জানতে চাইলে এফ এইচ আনসারী বলেন, এখন জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ কর্মক্ষম।
“দেশের ৬০ শতাংশ তরুণদের বেশিরভাগই শিক্ষিত। তারা উদ্যোক্তা হয়ে আধুনিক কৃষির সঙ্গে যুক্ত হলে দেশের কৃষি অনেক এগিয়ে যাবে।’’

সবশেষে কৃষি এবং কৃষকরাই বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে মিশে আছে কৃষি। কৃষিকে বাদ দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশের অর্ধেক মানুষ কৃষির সাথে জড়িত, এসব মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পেলে সামগ্রিক অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।’’

এমএম/এএইসএস