ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ত্যাগে অর্জিত ভাষা এখন অনেকটাই বিকৃত! (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:১৯ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০১:২৪ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রবিবার

পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রুতিমধুর ভাষা হচ্ছে বাংলা। ২০১০ সালে ইউনেস্কোর একদল ভাষাবিজ্ঞানীর দীর্ঘ গবেষণায় উঠে আসে বাংলার নাম। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ভবনের সিঁড়িতে বসে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গাইছিলেন ক’জন তরুণ। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভাষা হিসেবে বাংলা কতোটুকুা শ্রুতিমধুর, কিংবা শুনতে মিষ্টি লাগে কি-না? জিজ্ঞাসা ছিল, এ ভাষার প্রিয় শব্দই বা কী?

তাদের একজনের উত্তর ছিলো, বাংলা সাহিত্যে যে আনন্দ পায় সে, অন্য ভাষার বইতে এই আনন্দ খূঁজে পাওয়া যায় না।
আরেকজনের উত্তর ছিলো বাংলা ভাষায় তার সবচেয়ে পছন্দের শব্দ ‘মা’।

মা আর বাংলা-শব্দ দুটি ওদের কাছে বড়ই মধুর। তবে ওদের মনে আছে ক্ষেদ, হৃদয়ে রয়েছে ক্ষোভ। কারণ, শহীদের আত্মবলিদানে অর্জিত বাংলা ভাষা এখন অনেকটাই বিকৃত। নেই সঠিক উচ্চারণ, আছে নানান সংমিশ্রণ।

তাদের একজন বলেন, ‘‘বাংলা হচ্ছে একটি মানসম্মত ভাষা। এটি যে একটি আভিজাত্যের জায়গায় যেতে পারে, তা আপনার কথা বলার মধ্য দিয়ে উপস্থাপন  করতে পারেন।’’

আরেকজনের মন্তব্য, ‘‘আমরা এই ভাষার বিকৃতি মেনে নেব না। কারণ আমরা এই ভাষা অনেক কষ্টের বিনিময়ে অর্জন করেছি।’’

আধুনিক ভাষা ইন্সিটিটিউটের শিক্ষক রুপা চক্রবর্তীর মতে, বাংলা অনেকটা কবিতার মতো। এ ভাষার শব্দতরঙ্গ অনুরণন ছড়ায় মনে।

তিনি বলেন, ‘‘ভিন্ন ভাষাভাষীরা যখন আমাদের কথা শুনে তখন তারা বলে, তোমরা যখন কথা বল তখন তোমাদের কথা অন্যরকম এক ছন্দময় মনে হয়।’’

সংস্কৃত, ফার্সি, আরবি, হিন্দি, মৈথিলি ইংরেজি, পর্তুগিজসহ অন্যান্য ভাষার বহু শব্দ বাংলায় প্রবেশ করায় এ ভাষা হয়ে উঠেছে আরও শ্রুতিমধুর। 

এ প্রসঙ্গে রূপা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাংলা ভাষার অভিধানে ৯৫ শতাংশ শব্দই হচ্ছে আগত শব্দ। কিন্তু বাংলা ভাষার নিয়মের মধ্যে যে ব্যাকরণ রয়েছে, সেই নিয়মের মধ্য দিয়েই আগত শব্দগুলোকে আত্তীকরণ করে নিয়েছে।’’

রূপা চক্রবর্তীর মতে, বারংবার বাঁক বদল হলেও বাংলা ভাষা স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। এ ভাষা টিকে থাকবে বহু বছর। 

তিনি বলেন, বাংলা শেখার ব্যপারে মানুষের আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। একজন চাইনিজ এবং জাপানিজ যখন কথা বলে, তখন তারা কেউ কারও কথা বোঝেনা। তখন তারা বাংলাকে বেছে নেয়।

বাংলা ভাষাকে বিশ্বের নানান দেশে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ চলছে। ২০৫০ সালে বাংলা ভাষীর সংখ্যা ৩১ কোটি ৬০ লাখে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।

তিনি বলেন, দশ বছর পর বাংলাকে পৃথিবীর যে কোনও ভাষার চাইতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে সামান্যতম দূর্বল অবস্থানে পাবেন না। এবং এটা বাঙালী জাতি এবং এই বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত করবে।

শ্রুতিমধূরতার কারণেই প্রাচীন কাল থেকে আজ অব্দি বাংলা টিকে আছে এবং টিকেও থাকবে-জোর দিয়েই বলেন ভাষা বিশেষজ্ঞরা। 

এমএম/