ঢাকা, বুধবার   ১১ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২৭ ১৪৩১

এর আগেও রাশিয়ার কারণেই বিধ্বস্ত হয়েছিল ইউক্রেন

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ১২:০২ পিএম, ২ মার্চ ২০২২ বুধবার

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সশস্ত্র আক্রমণ চলছেই। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত বলে চলেছেন, তিনি মচকাবেন না। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে চলেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু জানেন কি, এই প্রথম নয়, এর আগেও রাশিয়ার কারণেই বিধ্বস্ত হয়েছিল ইউক্রেন? সে সময় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল কোটির উপরে। 

সময়টা তখন সেটা বিশ শতকের তিরিশের দশক। সাল ১৯৩২ থেকে ১৯৩৩। এই এক বছরে রাশিয়ার কারণে ইউক্রেনে মৃত্যু হয়েছিল অন্তত কোটি মানুষের। 

সেই সময় ইউরোপের শস্যের ঝুড়ি বলে খ্যাত ছিল ইউক্রেন। কিন্তু পরিস্থিতি এমনই দাড়িয়েঁছিল যে সেই ইউক্রেনেই শত চেষ্টাতেও শস্য মিলছিলো না। না খেতে পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়াই নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইউক্রেনবাসীর জন্য। 

এর কারণ কিন্তু ছিলো রাশিয়াই। প্রকৃতির রোষে নয়, সেই দুর্ভিক্ষ এসেছিলো রাশিয়ার কারণে।

সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন তখনও ভেঙে যায়নি। ইউক্রেনও তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্গত। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতায় কমিউনিস্ট দল।

যাদের মতাদর্শ ছিল সব সম্পত্তির মালিকানা হবে রাষ্ট্রের। কেউ ধনী বা গরিব থাকবে না, সবাই একই খাবার খাবে, একরকম পোশাক পরবে।

এই সূত্রেই কৃষকদের জমি ও পশুর মালিকানাও চলে গিয়েছিল রাষ্ট্রের হাতে। যৌথ খামার গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রনেতা স্ট্যালিন।

অর্থাৎ রাষ্ট্রের অধীনে একটি উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হল, শস্য রপ্তানি ও বিক্রির ভারও রাষ্ট্রের উপরেই, কৃষক কেবল নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করবে।

তখন ইউক্রেনের কুলাক অর্থাৎ কৃষক সম্প্রদায় এই ব্যবস্থা মানতে চায়নি। এই মালিকানাহীন শ্রমের মধ্যে আবারও ভূমিদাস প্রথার ছাঁয়া দেখেছিল তারা। সুতরাং তাদের শাস্তি দিতেই চেয়েছিলেন স্ট্যালিন। জোর করে জমি ও শস্য কেড়ে নেওয়া, সাইবেরিয়াতে নির্বাসন দেওয়া, এমনকি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া যাতে কেউ অন্য দেশে পালাতে না পারে, সবরকমের দমননীতি প্রয়োগ করেছিলেন তিনি।

এদিকে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মত শুনতে গিয়ে রাষ্ট্রচালিত যৌথ খামার ব্যর্থ হচ্ছিল। অপর দিকে কৃষকদের উপর নেমে এসেছিল অত্যাচার। সব মিলিয়ে ইউক্রেনে দেখা দিয়েছিল দুর্ভিক্ষ।

পরবর্তীকালে এই পরিস্থিতিকে চিহ্নিত করা হয় হলোডোমর নামে। মনে করা হয়, অন্তত এক কোটি লোক মারা গিয়েছিল ওই সময়। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা অবশ্য আরও বেশি।

যদিও রাশিয়া বরাবরই ওই ভয়ংকর পরিস্থিতিকে ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টাই করে গেছে। কিন্তু ইতিহাস থেকে মুছে যায়নি হলোডোমর এর কথা। 

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

এসবি/