ঢাকা, শুক্রবার   ১৭ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ২ ১৪৩১

হিলিতে হঠাৎ বাজার থেকে উধাও সয়াবিন তেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৩৮ পিএম, ৫ মার্চ ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৫:৪০ পিএম, ৫ মার্চ ২০২২ শনিবার

দিনাজপুরের হিলিতে হঠাৎ করেই বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে ৫ লিটারসহ বোতলজাত সয়াবিন তেল। বাজারের দু’একটি দোকানে ১/২ লিটারের তেলের বোতল পাওয়া গেলেও কোন দোকানেই মিলছে না ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল। বোতলজাত তেলের চেয়ে খোলা তেলের মূল্য বেশি হওয়ায় অনেক দোকানি বোতলজাত তেল খুলে খোলা তেল হিসেবে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে তেল না পাওয়ায় ও বাড়তি দামের কারণে বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষজন।

হিলি বাজারে তেল কিনতে আসা ইফতেহাদ সরকার বলেন, প্রতিমাসে ৫ লিটার বোতলজাত তেল ক্রয় করি সে লক্ষ্যে তেল কিনতে বাজারে এসেছি কিন্তু কোন দোকানেই ৫ লিটার তেলের বোতল নেই। দোকানীরা কি করছে এই ৫ লিটারের বোতলজাত তেলগুলো খুলে তেলের ড্রামে রেখে খোলা তেল হিসেবে বাড়তি দামে বিক্রি করছে। এতে করে লিটার প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা করে বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।  

অপর তেল কিনতে আসা নারী মাকছুদা আকতার বলেন, প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে তেলের দাম বাড়ছে, যে তেল কয়েকদিন আগে ১৫০ থেকে ৬০ টাকা ছিল সেই তেল এখন বর্তমানে ১৮০ টাকা দাড়িয়েছে। এতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে তেলের দাম যদি এভাবে প্রতিদিন বাড়ে তাহলে সাধারণ মানুষ চলবে কিভাবে। আমাদের মতো মানুষ হয়তোবা কষ্ট করে তেল কিনে খেতে পারছে কিন্তু যারা গরীব নিন্ম আয়ের মানুষ তাদের তো অবস্থা আরো খারাপ এতোদামে তেল কিনে
খেতে পারবেনা। এখনোই যে অবস্থা তেলের দাম নিয়ে শুরু হয়েছে তাতে করে সামনে রমজান সেসময় কি হবে তা জানিনা তেলের দামটা যদি কমে তাহলে সবার জন্য ভালো হয়।

বাজারে তেল কিনতে আসা ছানাউল ইসলাম নামের অপর ব্যক্তি বলেন, বাজারে তেল কিনতে এসে দাম বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে খালি তেলের বোতল নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। বাড়িতে গিয়ে বউকে বলবো পানি দিয়ে আজ তরকারি পাক করো তাছাড়া আর কোন উপায় নেই। যে তেল কয়েকদিন আগে ১৭০ টাকা ছিল সেই তেল এখন ২শ' টাকা ঠেকেছে। এত দাম দিয়ে তেল কিনবো না অন্য কিছু কিনবো বাড়ি থেকে যে হিসেব করে টাকা নিয়ে বাজারে আসি দাম বৃদ্ধির কারণে সেই হিসেব আর মিলছে না। 

হিলি বাজারের মুদি দোকানি ফেরদৌস আলম বলেন, বর্তমানে বোতলজাতে কোন তেল নেই তেলের যে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো রয়েছে তারা আগে আমাদের নিকট আসতো ওয়ার্ডার নিয়ে তেল ডেলিভারী করতো কিন্তু এখন আর তারা ওয়ার্ডার কার্টার জন্য আসছে না। এখন তারা বলছে তেল নেই যার কারনে কোন ওয়ার্ডার নিচ্ছে না বলছে যে পরে। অনেকেই বোতলজাত তেল ঢেলে খোলা হিসেবে বিক্রি করতেছে কিন্তু আমার কাছে বোতলজাত তেল নেই আর আমি বিক্রিও করিনি। বর্তমানে খোলা সোয়াবিন তেল বিক্রি করছি ১৮০ টাকা কেজি হিসেবে। যা গতহাটে ১৭৫টাকা বিক্রি করেছিলাম। তেল পাওয়া যাচ্ছেনা দাম বেশি আমরা যেমন দামে ক্রয় করছি তেমন দামে বিক্রি করছি।  

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, যেহেতু তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তাই ব্যবসায়ীদের তেলের মজুদ করার প্রবণতা ইতোপূর্বে ছিল। যার কারণে আমরা আমাদের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা নিয়মিতভাবে অব্যাহত রেখেছি। কোন ব্যবসায়ী যদি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে ভোজ্য তেল বিক্রি করেন অথবা তিনি মজুদ করেন সে বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা হবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হয় সেটি নেওয়া হবে। বাজারে ভোজ্য তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মুল্য মানুষের হাতের নাগালের মধ্যে রাখতে সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
কেআই//