ঢাকা, বুধবার   ১৫ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ১ ১৪৩১

‘পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও দরিদ্র মানুষকে রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:১৪ পিএম, ১০ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:০২ পিএম, ১০ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার

আলোচনা সভায় বক্তারা

আলোচনা সভায় বক্তারা

গত দুই বছরের অতিমারি দরিদ্র ও হতদরিদ্রদের পিছিয়ে দিয়েছে আরও অনেকখানি। আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ উসকে দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। তাই পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও দরিদ্র মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ধরে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদরা।

২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে দারিদ্র নির্মূল, পরিবেশ রক্ষা-সহ ১৭টি অভিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি নামে পরিচিত। সেই এসডিজি বাস্তবায়নে করোনা অতিমারি কতটুকু প্রভাব ফেলছে, তা পর্যালোচনা করতেই এই আলোচনা সভা।

সভায় অর্থনীতিবিদরা বলেন, গত দুই বছরের অতিমারি দেশের দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষকে আরো পিছিয়ে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বাড়িয়ে দিচ্ছে মূল্যস্ফীতি। সব মিলিয়ে দারিদ্র মানুষকে রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার পণ্যের দাম যে পর্যায়ে গেছে, তাতে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্রয় ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে সুরক্ষা দিতে হবে, আয় বাড়াতে হবে এবং জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ‘পিছিয়ে পড়া মানুষের সুরক্ষার জন্য এই মুহূর্তে টাকার দরপতন আটকাতে হবে। টাকার দরপতন আটকানো না গেলে আমদানি কমবে। এতে মূল্যস্ফীতি হবে। বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। পাশাপাশি ঋণের হার কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার।’

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক বলেন, ‘জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের শুল্ক কর কমাতে হবে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া মানুষ বেশি ব্যবহার করে যেসব পণ্য, সেগুলোর আমদানি খরচ কমানোর উদ্যোগ দরকার।’ একইসঙ্গে যারা পিছিয়ে পড়া মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, তাদের কর রেয়াত দেয়ারও প্রস্তাব করেন তিনি।

এসময় টিসিবির সরবরাহ বাড়ানো, খাদ্য, গ্যাস, সারে ভর্তুকি বাড়ানো এবং কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিসহ অন্যান্য কর্মসূচি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন তিনি। 

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারকে সাশ্রয়ী হতে হবে। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা খাতে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির আরেক ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, নাগরিক প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধি ফাতেমা ইউসুফ। সভাপতিত্ব করেন হেলথ ওয়ার্কের প্রধান ড. মোস্তাক রেজা চৌধুরী।
 
সামগ্রিক পরিস্থিতি উত্তরণে সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনির সম্প্রসারণ, বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি, ভোগ্যপণ্যের ওপর শুল্কহ্রাস, সুদের হার পর্যালোচনা এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর মতো উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ তাদের। 

অর্থনীতির প্রধান সূচক ও গতিপ্রকৃতি মূল্যায়নে সরকারি তথ্যপ্রবাহে ঘাটতির কথাও বলেন বক্তরা।   

এনএস//