ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪,   বৈশাখ ১৮ ১৪৩১

ফের ‘সুইসাইড নোট’ লিখে তরুণীর আত্মহত্যা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৬:৪১ পিএম, ২২ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার

আবারো ‘সুইসাইড নোট’ লিখে আত্মহত্যা করলেন এক তরুণী। চুয়াডাঙ্গা শহরের এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নিহতের বাবা মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

রোববার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শহরের আরামপাড়ার কালাম হোসেনকে (২৬) আসামি করে মামলাটি করা হয়।

এর আগে ওইদিন বিকেলে মাসুমা খাতুন (১৮) নামে এক মাদরাসা ছাত্রী শহরের হকপাড়াস্থ বাড়িতে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। 

সদর থানা-পুলিশের একটি দল মধ্যরাতেই ওই তরুণীর শোবার ঘর থেকে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করেছে। যাতে লেখা আছে, ‘কালাম এর কানে আমার মরার খবরটা দিও, তাহলে আব্বারে আর কিছু করবে না।’

এদিকে, মাসুমা খাতুনের মৃতদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা শহরের জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

নিহত মাসুমা খাতুন চুয়াডাঙ্গা শহরের রেল বাজার এলাকার আলিয়া মাদরাসার (চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসা) আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রকাশ্যে আমার মেয়ে মাসুমাকে মারপিট করে ও বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কথাবার্তা বলে সম্ভ্রমহানি ঘটায়। এর ফলে সে (মাসুমা) আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। আমি অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহরের রেল স্টেশনসংলগ্ন গমপট্টি এলাকার চাদোকান থেকে আমিনুল ইসলাম সংসার চালান। তার কোনো পুত্রসন্তান না থাকায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে ছোট মেয়ে মাসুমা খাতুন পড়াশোনার পাশাপাশি দোকানে বসে বাবাকে সহযোগিতা করতেন। দোকানে বসলে এবং মাদরাসা ও প্রাইভেট পড়তে যাওয়া-আসার পথে বখাটে কালাম হোসেন নানাভাবে মাসুমাকে উত্ত্যক্ত করতেন। 

বিবাহিত হয়েও কালাম বেশ কিছুদিন ধরে মাসুমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। মা-বাবা রাজি না হওয়ায় মাসুমাকে তার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার জন্যও চাপ দিতে থাকেন। একপর্যায়ে কালাম প্রকাশ্যে মাসুমাকে মারপিট ও গালিগালাজ করেন। যার ফলে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন মাসুমা।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, উপপরিদর্শক (এসআই) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাদীর লিখিত এজাহারে দেয়া অভিযোগের বিষয়টি সরেজমিন খোঁজ নিয়ে সত্যতা মিলেছে। মাসুমার নিজ হাতে লেখা সুইসাইড নোটটিও মামলার তদন্তে এবং অপরাধ প্রমাণে সহায়ক হবে। 

এনএস//