ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বিশ্বে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির দায় কার? যুক্তরাষ্ট্র নাকি চীনের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৭ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২২ শনিবার | আপডেট: ১০:১০ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২২ শনিবার

বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি এখন ঝুঁকির মুখে, জেঁকে বসেছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। বেড়ে গেছে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়। ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর সংকট প্রকট হয়। এরপর রাশিয়ার ওপরে আসে পশ্চিমাদের একের পর এক কঠোর নিষেধাজ্ঞা। ফলে সংকট আরও ঘনীভূত হয়। এরইমধ্যে পশ্চিমা কিছু গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, চীনের কঠোর করোনা বিধিনিষেধের কারণেই বেড়েছে বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম।

সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের চলমান লকডাউনের ফলে আমদানিকারকদের চাহিদা কমেছে। এতে বিভিন্ন দেশে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে পণ্যের দাম।

তবে এটা সত্য যে, বৈশ্বিক অর্থনীতি উচ্চ মূল্যস্ফীতির যুগে প্রবেশ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, মার্চে দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ১৯৮১ সালের পর সর্বোচ্চ। যুক্তরাজ্যে একই সময়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ৭ শতাংশে, যা গত তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে এই হার ছিল ছয় দশমিক দুই শতাংশ। যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান বিভাগ এ তথ্য জানায়।

এদিকে মার্চে ইউরোজোনে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে, যা ইউরোজোন প্রতিষ্ঠার পর সর্বোচ্চ। ৮ এপ্রিল রাশিয়ার মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ দশমিক ৪৯ শতাংশে, ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ।

বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির এমন উচ্চ হারের কারণ হিসেবে অনেকগুলো বিষয়কে দেখা হচ্ছে। তবে করোনা মহামারি হচ্ছে এর মধ্যে অন্যতম কারণ। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তাছাড়া মস্কোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সংকটকে দ্রুত ত্বরান্বিত করেছে।

অন্যদিকে কঠোর বিধিনিষেধ ও করোনা প্রতিরোধে জিরো কোভিড নীতি অবলম্বন করা সত্ত্বেও সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখছে চীন। বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখছে দেশটি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের বাণিজ্য বেড়েছে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় নিজেদের ব্যর্থতা ও রাশিয়ার ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে তৈরি হওয়া সংকট ঢাকতে চীনের নীতির সমালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

করোনা মহামারির পর সরবরাহ সংকট পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠার আগেই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর আসে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা, যা সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলে। জ্বালানি, কাঁচামাল ও খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ঘাটতি দেখা যায়।

রাশিয়ার অর্থনীতিকে শাস্তি দিতেই ধারাবাহিকভাবে মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট। তবে বাস্তবতা হলো এ নিষেধাজ্ঞা মূল্যস্ফীতিতে জর্জরিত উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। শ্রীলঙ্কার মতো অনেক উন্নয়নশীল দেশ এরই মধ্যে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। যার ছোঁয়া লেগেছে নেপালেও। সূত্র- গ্লোবাল টাইমস

এনএস//