অনিশ্চয়তা কাটিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জব্বারের বলী খেলা (ভিডিও)
শিউলি শবনম, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত : ০১:০২ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২২ রবিবার

ফাইল ছবি
অনেক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দুই বছর পর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা। মাঠ নির্মাণ, বলীদের তালিকা তৈরিসহ সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। তিন দিনের মেলাকে ঘিরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করেছেন। লালদিঘীতে জায়গা না পাওয়ায় ১১৩তম এ আসর প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবে লালদিঘীর চৌরাস্তার মোড়ে।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে জব্বারের বলী খেলার সূচনা করেন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত একটানা ১১০ বছর লালদিঘীর মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়। খেলাকে ঘিরে প্রতিবছর বসে বৈশাখী মেলা।
শুধুমাত্র ২০২০-২০২১ দুই বছর করোনার কারণে বন্ধ রাখতে হয় শতবর্ষী এই খেলা। কিন্তু এবার সংস্কারের কারণে লালদিঘীর মাঠ না পাওয়ায় খেলা বন্ধের ঘোষণা দিলে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সুধী মহল থেকে।
তবে সব ধরনের অনিশ্চিয়তা শেষে সংবাদ সম্মেলন করে আয়োজনের ঘোষণা দেন সিটি মেয়র। তিনি জানান, চট্টগ্রামের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি ধরে রাখতে ১২ বৈশাখ নির্দিষ্ট তারিখে জৌলুসপূর্ণভাবে এবারও ঐতিহ্যবাহী এই খেলার আয়োজন করা হবে।
সংস্কার শেষে পরবর্তীতেও এই বলী খেলা লালদীঘির মাঠেই হবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বলী খেলা অনুষ্ঠিত হবে কিন্তু মেলাটা আগে পাঁচদিন হত এবার তিনদিন করা হয়েছে। ১১ থেকে ১৩ বৈশাখ।
এখন লালদিঘীর চার রাস্তার মোড়ে চলছে মঞ্চ নির্মাণ কাজ। ইতিমধ্যে সারাদেশ থেকে খেলায় অংশ নেয়া প্রায় দেড়শতাধিক বলীর তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। মেলাকে ঘিরে আসতে শুরু করেছে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সাথে জড়িত শত শত ব্যবসায়ীরাও। ১২ বৈশাখ শুরু হবে তিন দিনের বলী খেলা। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এই খেলা।
জব্বারের বলী খেলা ও মেলার সভাপতি জহর লাল হাজারী বলেন, “২৪, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল মোট তিনদিন জব্বারের বলী খেলা হবে সাথে বৈশাখী মেলা। সবাইকে আমন্ত্রণ রইল।”
আয়োজকরা বলছেন, সারাদেশে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলা প্রায় বিলুপ্ত। তাই শতবর্ষী এই সংস্কৃতি বাঁচাতে যুগ যুগ ধরে বলী খেলা ও মেলার আয়োজন করে যেতে চান আবদুল জব্বারের পরিবারের সদস্যরা।
আবদুল জব্বারের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল বলেন, “প্রস্তুতির সবকিছু সম্পন্ন করে এনেছি। সুষ্ঠুভাবে জব্বারের বলী খেলা অনুষ্ঠিত হবে।”
তিন দিনের খেলা ও মেলাকে ঘিরে সারাদেশ থেকে দুর্লভ গৃহস্থলী পণ্য, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের নানান উপকরণ নিয়ে মেলায় যোগ দেন লাখো ব্যবসায়ী। এই মেলা বন্ধ হয়ে গেলে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়ত প্রত্যেকেই।
এএইচ/