ঢাকা, সোমবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

নিজ কবরের ছবি নিজেই এঁকেছিলেন গাফ্ফার চৌধুরী (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৬ পিএম, ২৯ মে ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১২:০৯ পিএম, ২৯ মে ২০২২ রবিবার

নিজের কবরের শৈল্পিক ছবি নিজেই একেছিলেন সৃষ্টিশীল সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। প্রকৌশলী দিয়ে নকশাও চূড়ান্ত করে গেছেন বরেণ্য এই লেখক।

আব্দুল গাফ্ফার চৌধূরীকে যুক্তরাজ্যে দেখা শোনা করতেন তার বড় মেয়ে বিনীতা চৌধূরি। ক্যান্সারে আক্রান্ত বিনীতা গত ১৩ এপ্রিল মারা যান। যখন গাফ্ফার চৌধুরী হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় নড়ছিলেন। বিনীতাকে গাফ্ফার চৌধুরী বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তার সমাধিসৌধের নকশা কেমন হবে।
 
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নকশার সঙ্গে জড়িত একজন ইঞ্জিনিয়ার বলেন, কবরের ডিজাইনের ব্যাপারে উনার মেয়ে বিনীতা চৌধুরীর পরামর্শ এবং আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর তত্ত্বাবধানেই আমরা ডিজাইনটি সম্পন্ন করি। যার মধ্যে ইসলামিক আর্কিটেকচার, ইউরোপিয়ান আর্কিটেকচারেরও কিছুটা ছাপ রেয়েছে। সেই আদলেই আমরা মার্বেল দিয়ে একটা ডিজাইন করি। ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানও আমাদের ডিজাইন টিমে ছিলেন, উনার পরামর্শও আমরা নিয়েছি। বিশেষ করে মার্বেল সিলেকশন তিনি করেছেন।

অনবদ্য গাফ্ফার চৌধুরীর এই নকশায় যেমন আছে মায়া তেমনি মোহাচ্ছন্ন পৃথিবী ছেড়ে বহুদূরের নক্ষত্রে হারিয়ে যাবার ইঙ্গিতও বিদ্যমান।
 
ওই ইঞ্জিনিয়ার আরও বলেন, উনি মারা যাওয়ার আগে উনার কবরের ডিজাইন দেখে গেছেন। উনার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্রতি বছরই উনি দেশে আসতেন। উনার ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে আমাদের নিয়ে একসঙ্গে কবর জেয়ারত করতেন।

অনিবার্য মৃত্যুকে ভালোবেসে যে নকশা প্রথিতযশা সাংবাদিক করেছিলেন তাতে শুধু মৃত্যুর দিনটিই ফাঁকা রেখেছিলেন। সেই শূণ্যস্থান ভরাট করে চলে গেলেন বাঙালির ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অমর কবি গাফ্ফার চৌধুরী। 

জীবদ্দশায় পাহাড়সম খ্যাতির মুকুটধারী গাফ্ফার চৌধুরী বলেই গেছেন, তার স্ত্রী সেলিমা আফরোজের কবরে যা লিখতে হবে। আর সেটি হলো বিশ্বজোড়া বাঙালির অমর সৃষ্টি একুশের গানের বিখ্যাত কবিতার অংশবিশেষ- আমি কী ভুলিতে পারি। গাফ্ফার চৌধুরী এপিটাপে লেখা রবে- মৃত্যুতে হয়না শেষ, জীবনতো অশেষ-অশেষ।

এমএম/