ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৮ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ১৩ ১৪৩১

ভূমিদস্যুদের বালু উত্তোলনে ফসলি জমি পরিণত হয়েছে হ্রদে (ভিডিও)

অখিল পোদ্দার

প্রকাশিত : ১২:৩৬ পিএম, ১০ জুন ২০২২ শুক্রবার

জমি অন্যের কিন্তু মাটি বিক্রি করে ভূমিদস্যুরা। উপর্যুপরি বালু উত্তোলনে ফসলি মাঠ রূপ পেয়েছে নদীতে। ক্ষেত ভেঙে চলছে ট্রাক আর মাটির লরি। এসব নিয়ে কথা বলার সাহস নেই জমি মালিকদের। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান ঘুরে এসে জানাচ্ছেন অখিল পোদ্দার।

সিরাজদীখানের লতব্দী ইউনিয়নের খিদিরপুর মৌজা। তিন ফসলি জমির মাটি বিক্রির পর বালু তুলতে খোঁড়া হয়েছে এক-দেড়শ ফুট। আর তা দেখতে গেলে জমির মালিকদের উপর উল্টো চড়াও হয় ভূমিদস্যুদের ভাড়াটিয়া বাহিনী।

একজন ভুক্তভোগী বলেন, "এক সময় তিন ফসল করছি, সেই জায়গায় এখন গভীর পানি হয়ে গেছে।"

সোহেল নামের একজন সেখানে মাছ ছেড়েছে, কিন্তু এ ব্যাপারে জমির মালিকদের অনুমতি নেননি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। 

একজন ভুক্তভোগী বলেন, " সোহেল-সোহাগের সঙ্গে আরও দলবল আছে, লাঠিসোটা নিয়ে এক গ্রুপ বসে থাকে, আরেক গ্রুপ মাটি কাটে।" 

এই মাটি কাটার বিনিময়ে জমির মালিকরা কোনো টাকা পয়সাও পাননি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।   

কোথাও ৩ কাঠা, কোথাও আবার দশ বিশ শতক জমি কিনে ইঁটের ভাটায় মাটি বিক্রি করে এই চক্র। পরে বালু তুলতে ইচ্ছেমতো গভীর করে। এতে সমতলের মাঠ যেমন হারিয়ে যাচ্ছে তেমনি পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। 

স্থানীয় একজন বলেন, "ফসলি জমির মাঝ দিয়ে লরি, ট্রাকটর নিয়ে যাওয়ায় জমি শক্ত হয়ে যাচ্ছে।" 

আরেকজন বলেন, "দুই পাশে বিদ্যুতের টাওয়ার আর মাঝখান থেকে মাটি নাই, টাওয়ার দুইটা যদি পড়ে যায়!"

চারটি মৌজার ৬ টি গ্রামের মাঠ থেকে কাটা হচ্ছে মাটি আর বালু। এলাকার পুরুষদের একটি অংশ থাকেন প্রবাসে। সন্ত্রাসীর ভয়ে তাই প্রতিবাদ করেন না নারীরা। এই সুযোগে ফসলি মাঠ দখলে মরিয়া ভূমিদস্যুর দল।  

ঘটনা জেনেও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় মুন্সীগঞ্জের জেলা ও সিরাজদীখান উপজেলা প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। অসহায় চেয়ারম্যান বিচার চাইলেন সর্বোচ্চ মহলে।

চেয়ারম্যান বলেন, "ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, তাদের জেল জরিমানা করতে হবে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দু চারজনকে দিলে এই এলাকায় মাটি কাটা বন্ধ হবে এবং মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।" 

এসবি/