ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

যাত্রী খরায় লঞ্চ, বেশিরভাগ টিকেট অবিক্রিত (ভিডিও)

শিউলি শবনম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৭ পিএম, ৩০ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার

পদ্মাসেতুতে যানচলাচলে কমছে নৌ-পথের যাত্রী। সদরঘাট থেকে যাতায়াত করা প্রায় প্রতিটি লঞ্চেই অবিক্রিত বেশিরভাগ কেবিনের টিকিট, যাত্রী খরায় ডেকগুলোও। বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে অনেকেরই বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা বিআইডব্লিউটিএ’র।

মেয়ের ঢাকার বাসা থেকে নলছিটিতে নিজের গ্রামে ফিরছেন বয়সের ভারে ন্যূব্জ সায়েরা বেগম। পদ্মাসেতু দিয়ে কম সময় লাগলেও অসুস্থ শরীরে বাসে চড়া অসম্ভব বলেই লঞ্চে তার এই যাত্রা।

সায়েরা বেগম বলেন, “বাসে যেতে পারি না, বয়স হয়েছে।”

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ২৬ জুন যানচলাচলে পদ্মাসেতু উন্মুক্ত হলে সমান্তরালে কমছে নদীপথের যাত্রীও। যারা লঞ্চে গন্তব্যে যেতে চান, তাদের বেশিরভাই সায়েরা বেগমের মতো অসুস্থ ও বয়স্ক।

আবার কেউ কেউ পরিবারের শিশু ও নারীদের জন্য, কেউ কেউ মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে এবং কেউ কেউ কম ভাড়ায় শুয়ে-বসে আরামদায়ক ভ্রমণে লঞ্চে যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। 

কেউ কেউ বাসের টিকিট না পেয়েও এসেছেন সদরঘাটে। তবে, বেশিরভাগই এবার লঞ্চে গেলেও পরেরবার বাসে যাতায়াত করতে চান।

যাত্রীরা জানান, “যখন সাথে বোঝা না থাকবে তখন গাড়িতে যাতায়াত করবো।”

পন্টুনগুলোতেও পাল্টে গেছে মানুষের চিরচেনা ভিড় ও কোলাহল। বিলাসবহুল থেকে সাধারণ লঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে লঞ্চ কর্মচারীদের নানা ধরনের হাঁকডাক দিতেও দেখা যায়। 

স্বাভাবিক সময়ে এসব লঞ্চের কেবিন কিংবা সোফায় জায়গা পেতে করতে হয় নানা ধরনের তদবির। সেই সাথে ডেকের বসার জন্য বিকাল থেকে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। কিন্তু এখন অনেকটা ফাঁকা যাচ্ছে।

লঞ্চের ব্যবস্থাপক ও কর্মচারীরা জানান, বিক্রি হয়নি দুই-তৃতীয়াংশ কেবিনের টিকিটও।

সড়কপথে সময় কম লাগায় লঞ্চে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী কমে স্থায়ীভাবেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, ঝালকাঠির মতো নৌ-রুটে লঞ্চ চলাচল।

বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, “আমাদের এখানে বিপুলসংখ্যক মানুষের ইনভেলমেন্ট রয়েছে। সেক্ষেত্রে হঠাৎ একটা ধাক্কা আসে সেটা সামলানো, কিছু মানুষের বেকার হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয় সে বিষয়গুলো সরকারি পর্যায়ে চিন্তা-ভাবনা হবে।”

তবে যাত্রী ধরে রাখতে নৌ-পথের ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর তাগিদ সংশ্লিষ্টদের। 

এএইচ