ঢাকা, শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২০ ১৪৩১

ফের নারীদের নতুন চ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে উইম্বলডন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ৮ জুলাই ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:৩৬ পিএম, ৮ জুলাই ২০২২ শুক্রবার

এলেনা রিবাকিনা ও ওন্স জাবেউর

এলেনা রিবাকিনা ও ওন্স জাবেউর

আবারও নারীদের বিভাগে নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখতে চলেছে উইম্বলডন। বৃহস্পতিবার যে দুই খেলোয়াড় ফাইনালে উঠলেন, তাদের কেউই খেতাব জয় তো দূরে থাক, এর আগে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালেই ওঠেননি। 

এদিন প্রথম সেমিফাইনালে তিউনিশিয়ার ওন্স জাবেউর ৬-২, ৩-৬, ৬-১ গেমে হারান ৩৪ বছরের তাতিয়ানা মারিয়াকে। অপর সেমিফাইনালে কাজাখস্তানের এলেনা রিবাকিনা ৬-৩, ৬-৩ উড়িয়ে দিলেন উইম্বলডনের প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপকে।

২০১৯ সালে এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন হালেপ। ২০২০ সালে উইম্বলডনের আসর বসেনি। ২০২১-এ চোট-আঘাতের কারণেই তিনি খেলেননি উইম্বলডনে। এবারের প্রতিযোগিতায় শুরু থেকেই তাকে ট্রফির দাবিদার মনে করা হচ্ছিল। 

বিশেষত, গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইগা শিয়নটেক ছিটকে যাওয়ায় সেই ধারণা আরও জোরালো হয়। তবে সেমিফাইনালে অখ্যাত রিবাকিনার কাছে যে হালেপের দৌড় শেষ হয়ে যাবে- এটা কেউই ভাবতে পারেননি। এদিন ম্যাচ জিততে মাত্র ৭৫ মিনিট লাগল রিবাকিনার।

তিউনিশিয়ার জাবেউরের মতোই কাজাখস্তানের প্রথম টেনিস খেলোয়াড় হিসাবে কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠলেন রিবাকিনা। ২০১৫-সালে গারবিনে মুগুরুজার পর এত কম বয়সী কেউই নারী সিঙ্গলসের ফাইনালে ওঠেননি। 

২০১৯-সালে বুখারেস্ট এবং ২০২০-সালে হোবার্ট বাদে এখনও কোনো ডব্লিউটিএ সিঙ্গলস ট্রফি জেতেননি রিবাকিনা। তবে ফাইনালে উঠেছেন অনেক বার। এ বছর জানুয়ারিতেই অ্যাডিলেড ওপেনে হারেন তৎকালীন বিশ্বের এক নম্বর অ্যাশলে বার্টির কাছে।

দুর্দান্ত ‘এস’ সার্ভিস করার জন্য তাকে টেনিস সার্কিটে ‘এস কুইন’ নামে ডাকা হয়। এ দিন পাঁচটি ‘এস’ সার্ভিস মেরেছেন। চলতি বছরে এ নিয়ে ২১৯টি ‘এস’ হয়ে গেল তার। শুধু তাই নয়, তার শটে বৈচিত্রও রয়েছে। হালেপের বিরুদ্ধে সেটা ভালই বোঝা গিয়েছে। দুরন্ত কোর্ট কভারেজ করতে পারেন। তার সঙ্গে রয়েছে নিখুঁত গ্রাউন্ডস্ট্রোক এবং শক্তিশালী ফোরহ্যান্ড। হালেপের বিপক্ষে তিনি ১৭টি উইনার শট মেরেছেন। হালেপ নিজেও ১৪টি উইনার শট মারেন। 

তবে এদিন আটটি ডাবল ফল্ট করেন তিনি। তার মধ্যে দু’টি হয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্রেক পয়েন্টে। সেমিফাইনাল পর্যন্ত একটিও সেট খোয়াননি হালেপ। অথচ সেমিফাইনালে দাঁড়াতেই পারলেন না ২৩ বছরের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে, উইম্বলডনে ওন্স জাবেউরের স্বপ্নের দৌড় অব্যাহত। প্রথম আরবীয় নারী হিসাবে কোনো গ্র্যান্ডস্ল্যামের সেমিফাইনালে উঠেছিলেন। সেই রেকর্ডে আরও উন্নতি করে এবার ফাইনালে পৌঁছে গেলেন। ট্রফি জিতলে নতুন ইতিহাস তৈরি করবেন তিনি। 

উল্টো দিকে যিনি ছিলেন, সেই মারিয়া দু’বার মা হওয়ার জন্য টেনিস থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপরেও ফিরে এসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যে টেনিস খেলেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। শেষ দিকে আর টানতে পারছিলেন না। তা সত্ত্বেও ছন্দে থাকা জাবেউরের থেকে একটি সেট কেড়ে নিয়েছেন তিনি।

এই নিয়ে টানা ১১টি ম্যাচ জিতলেন জাবেউর। শেষ ২৪টি ম্যাচের মধ্যে ২২টি জিতেছেন। ১৯৬৮ সালে পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়দের গ্র্যান্ড স্ল্যামের অন্তর্ভুক্তির পর আফ্রিকার কোনও খেলোয়াড় ফাইনালে ওঠেননি। জাবেউর দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন। 

ম্যাচের পর তিনি বলেছেন, “তিউনিশিয়ার একজন গর্বিত নারী হিসেবে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। জানি তিউনিশিয়ার লোক এখন পাগলের মতো উচ্ছ্বাস করছে। আশা করি আমার পারফম্যান্সের সাহায্যে আগামী প্রজন্মকে ভালভাবেই অনুপ্রাণিত করতে পারব। শুধু তিউনিশিয়া নয়, আরব এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে আরও টেনিস খেলোয়াড়কে উঠে আসতে দেখতে চাই। নিজের অভিজ্ঞতা ওদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।”

এনএস//