ভিডিও দেখুন
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ: পুরো চক্রকে জাতির সামনে উন্মুক্ত করতে হবে
প্রণব চক্রবর্তী
প্রকাশিত : ১২:৪৩ পিএম, ৯ জুলাই ২০২২ শনিবার

সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার মাত্র ৪২ দিনের মাথায় খুনিদের দায়মুক্তি দিতে জারি করা হয় ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। ১৯৭৯ সালে পঞ্চম সংশোধনীর পর সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় কালো আইনটি। ১৯৯৬ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীতে কুখ্যাত ওই অধ্যাদেশ বিলুপ্তির পর সম্ভব হয় খুনিদের বিচার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘটে পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম ঘৃণ্য ঘটনা। ঘাতকের বুলেটে শহীদ হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা।
রক্তের দাগ তখনো শুকায়নি। ২৬ সেপ্টেম্বর কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে দিলেন খুনি খোন্দকার মোশতাক। যেকোনো আদালতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় এতে।
রাষ্ট্রীয় পুরস্কার হিসেবে খুনিদের নিয়োগ দেওয়া হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দূতাবাসে, বানানো হয় এমপি-মন্ত্রী। কথিত গণভোটে রাষ্ট্রপতি হয়ে ক্ষমতার মসনদে বসেন জেনারেল জিয়া।
এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী স. ম. রেজাউল করিম বলেন, “সংবিধানে বলা হয়েছে আইনের উর্দ্ধে কেউ না। যে অবৈধ ক্ষমতা দখল করবে অথবা যে অবৈধ কর্ম করবে তাকে কোন ভাবে বৈধতা দেওয়া যাবে না।”
একই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “এক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বা পরবর্তীতে যা আইনে রূপান্তরিত করা হলো- এই কারণে বাংলাদেশে হত্যাকাণ্ডের যে রাজনীতি একবার শুরু হয়েছে, সন্ত্রাস-সহিংসতা যে শুরু হয়েছে এটা কিন্তু দমন করা এখন সত্যি খুব কঠিন কাজ।”
১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই পঞ্চম সংশোধনীর পর আইনটি বাংলাদেশ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এর মধ্য দিয়েই জিয়া প্রমাণ করেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল কুশীলবদের তিনিই একজন।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী স. ম. রেজাউল করিম বলেন, “১৯৭৫-এর ১৬ আগষ্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পযর্ন্ত যত ঘটনা ঘটছে এবং যারা ঘটিয়েছেন তাদের সব কিছুকে বৈধতা দেওয়ার জন্য ৫ম সংশধনী করা হয়েছিলো। সেটাও সম্পূর্ণ অবৈধ ছিলো।”
ঢাবির সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “অতি শীঘ্রই একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করে, শুধু তদন্ত কমিশন করা নয় বরং তদন্ত কমিশন গঠন করে এই পুরো চক্রান্তের সঙ্গে কারা জড়িত ছিলো সবই জাতির সামনে উন্মুক্ত করা উচিত।”
এই একটি অধ্যাদেশেই দীর্ঘ ২১ বছর দৃশ্যত থমকে ছিলো আইনের শাসন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১২ নভেম্বর সেটি বাতিল হয় সংসদে। কালো আইন থেকে বেরিয়ে করা হয় ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার। কলঙ্কমুক্ত হয় বাংলাদেশ।
আরএমএ/ এসএ/