৫০ বছরেও হয়নি ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা (ভিডিও)
মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:০৩ পিএম, ২০ জুলাই ২০২২ বুধবার
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও প্রণয়ন হয়নি বাস্তবভিত্তিক ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা। সেকেলে জরিপে নির্ভর করে সাজানো হচ্ছে গ্রাম ও স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কাঠামো। জমির অপচয়ের পাশাপাশি এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে টেকসই অগ্রগতি।
প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের লীলাভূমি এই বাংলাদেশ। এক লাখ-ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ কিলোমিটারের এই ব-দ্বীপ রাষ্ট্রটির নিজস্ব স্বকীয়তা আছে, অঞ্চলভেদে।
সমতল ভূমি, উপকূলীয় এলাকা, হাওর-বাওর, পাহাড়, বন-বনানীসহ ভূমিরূপের অপূর্ব সমাহার ছোট্ট এই দেশে।
আপনি কোন কাজের পরিকল্পনা করছেন, আপনার পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজন হবে। এটা হলো ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিন্তু যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তাহলে তো আরও বেশি নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রযোজন হবে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য হতাশাজনক হল যে, এখানকার যেসব তথ্য-উপাত্ত থাকে নীতি নির্ধারকদের টেবিলে সেগুলো নির্ভরযোগ্য হয় না। যার কারণেই সিদ্ধান্তগুলো কেমন যেন গোলমেলে হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা হয়নি। কি পরিমাণে জলাধার আছে, কি পরিমাণে বাড়ি-ঘর, শিল্প-কলকারখানা তৈরি হবে। সে রকম তথ্য-উপাত্ত সেভাবে করা হয়নি। তারা বলছেন যদি সেটা না হয় তাহলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যে চ্যালেঞ্জ, যে পরিকল্পিতভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন সেটা আসলেই সম্ভব হবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, “আমাদের পাহাড়ী অঞ্চল আছে, হাওড় অঞ্চল, বিল, উপকূলীয় অঞ্চল আছে। প্রত্যেকটা অঞ্চলের ক্যারেক্টারিজ ভিন্ন। সেই ভিন্নতাটাকে কাজে লাগানোর প্রয়োজন হবে। সেই কারণেই সমগ্র বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রয়োজন।”
এক ওষুধ যেমন সব রোগের উপশম করতে পারে না- তেমনি এক ধ্যান-ধারণা ও উন্নয়ন কৌশল সব অঞ্চলের জন্যে জুতসই হবে না।
অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, “জলাভূমি, বনাঞ্চল এগুলো প্রতিবছরই কমছে। সকল বিবেচনায় বাংলাদেশের যে ক্লাইমেটিক অবস্থা, ভৌগোলিক অবস্থা এবং উন্নয়নের যে ধারা বর্তমানে আছে তাতে করে সমগ্র বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি হচ্ছে একটি ভৌত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা।”
জমি নিয়ে নানা ধরণের জরিপ বা সার্ভে তো হয়-ই। কিন্তু এগুলোতে শুধু জানানো হয় মালিকানা কার-কতটা?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আরও বলেন, “এই ভৌত ভূমির ব্যবহার পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে কৃষি জমি, বনভূমি, জলাভূমি এগুলোকে চিহ্নিত করা এবং এগুলোর যেন ব্যবহার পরিবর্তন না হয়।”
একটি ভৌত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, সুন্দর এই দেশটিকে সাজাতে সহায়ক হবে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।
অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, “সেটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান দরকার। সেটা স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও করতে পারে। প্ল্যানিং কমিশনারের মাধ্যমে প্রণয়নের কাজটা শুরু হতে পারে।”
এএইচ
