ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩০ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

রহিমার ভালোবাসায় যশোরে হাসপাতাল নির্মাণ মার্কিন স্বামীর

বেনাপোল প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:১৪ এএম, ৪ আগস্ট ২০২২ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৯:৩৭ এএম, ৪ আগস্ট ২০২২ বৃহস্পতিবার

যশোরের কেশবপুরের মেহেরপুর গ্রামের মেয়ে রহিমা খানের প্রেমে পড়ে বাংলাদেশে আসেন আমেরিকান নাগরিক ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস্ট মার্ক হোগল। ১৩ বছরের দাম্পত্য জীবন পার করেছেন তারা। তবে নতুন খবর হলো, ভালোবাসার মানুষটির নাম চিরকাল অক্ষত রাখতে ‘রহিমা সৌলডারস্’ নামে একটি হাসপাতাল নির্মাণ করছেন এই আমেরিকান।

উপজেলার মেহেরপুর গ্রামে চারতলা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করছেন ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস্ট মার্ক হোগল। প্রথমে চারতলা বিশিষ্ট নির্মাণাধীন ভবনটি নিজের বাড়ি করার জন্য তৈরি হলেও পরে ভালোবাসার মানুষটির জন্য হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। আর হাসপাতালে নাম দিলেন ‘রহিমা সৌলডারস্’। 

এই হাসপাতালে আমেরিকান এবং বাংলাদেশি ডাক্তাররা সেবা দান করবেন বলে জানা গেছে।

রহিমা খাতুন বলেন, ক্রিস্ট মার্ক এখানে একটি বাড়ি নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তার এ সিদ্ধান্তের পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি গ্রামের মানুষের জন্য এই বাড়িটিতে হাসপাতাল তৈরি করছেন। আগামী এক বছরের মধ্যে এ হাসপাতাল তৈরির কাজ শেষ করবে বলে আশাবাদী তিনি।

প্রেমের গল্প শুনতে চাইলে রহিমা বলেন, খুব ছোটবেলায় অভাবের কারণে বাবা-মায়ের হাত ধরে ভারতে চলে যাই। মা পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে একটি বাড়িতে গৃহকমীর কাজ নেন। ১৩ বছর বয়সে বাবা আমাকে বিয়ে দিয়ে দেন। একে একে কোলজুড়ে আসে তিনটি সন্তান।

সেই সংসারে অভাব-অনটনের কারণে প্রাক্তন স্বামী গ্রামের জমি বিক্রি করে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। বাধ্য হয়ে জীবিকার সন্ধানে মুম্বাই শহরে যান তিনি। সেখানে থাকাকালীন হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় ক্রিস্ট মার্ক হোগলের সঙ্গে রহিমার পরিচয় হয়। প্রথম দেখাতেই রহিমাকে ভালো লেগে যায় এই আমেরিকান নাগরিকের।

হিন্দিতে দু-এক লাইন কথা বলার পর তারা আবার দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবেই ভালোলাগাটা আস্তে আস্তে ভালোবাসাতে রূপ নেয়। ছয় মাস প্রেমের পর তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে কেশবপুরের মেহেরপুর রহিমার বাবার ভিটায় ফিরে আসেন তারা। সেখানেই দেখতে দেখতে পার করেছেন পাঁচটি বছর।

ক্রিস্ট মার্ক হোগল বলেন, “রহিমার মতো স্ত্রী পেয়ে আমি অনেক সুখে শান্তিতে আছি। বাকিটা জীবন রহিমাকে পাশে নিয়ে পার করতে চাই।”

প্রতিবেশি তুহিন হোসেন বলেন, “তারা সুখে শান্তিতে সংসার করছে। তাদের দুজনের কখনও ঝগড়া করতে দেখিনি। তবে ক্রিস্ট মার্ক একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। রহিমাকে ভালোবেসে গ্রামের মানুষের জন্য একটি হাসপাতাল নির্মাণ করছেন।”

এএইচ