ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১

কিংশুক চক্রবর্তীর একগুচ্ছ কবিতা

কিংশুক চক্রবর্তী 

প্রকাশিত : ০৯:৪৬ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৯:৫৫ পিএম, ১৩ আগস্ট ২০২২ শনিবার

ইহনিবদ্ধ 

এই যে কাটা ঘুড়ির মতো ঠোকর খাচ্ছি 
আটকে পড়া বেদের চৌকাঠে; 
হাওয়া কমলে
নাক ঘষছি দরজায়, 
কে বলবে কাল রাতে ছিলাম 
কোন অভিসারে!

দিব্যি এখন আমি বুদ্ধের মুখ,
অর্চনায় উজ্জ্বল পূর্ণিমার 
জোছনা চাদরে ঢাকি 
চাঁদের বুকে তার অজ্ঞাতে 
এঁকে দেওয়া কলংক। 

আলগা হাওয়ায় কখন যে ক্ষণজন্মা  
মুমুক্ষুত্বের অভিকর্ষ ছিঁড়ে 
পেণ্ডুলামে ফের   
মাখছি সন্ধিক্ষণের আকাশ 
কয়েক ধাপ পেরোলে যেখানে জাতিস্মর 
আর চিনতে পারবে না তার ঘর!
————————————
প্রেম অপ্রেম 

প্রাচীর ছিল একটা
তবে বাস্তিল নয়। 
খোলা ডানা হাঁপালেও 
ফিরোজা আকাশে চেয়েছি 
এক মুঠো আলোর কার্নিভাল ভাঙা ঘরেও
দিক নীড়ের প্রত্যয়। 

তোমার ছটফটে ডানা 
এক চুটকিতে নিংড়ে নিতে চায় সূর্য।  
কোথায় আবেগী খড়কুটো  
এতো উষ্ণতা দেবে!   

আগলাই স্বপ্নের হাঁড়িকুঁড়ি বন্যার জলে। 
বৈশ্বানরে তোমার আকাঙ্ক্ষারা 
দগ্ধ ক্ষুধার পাত্রে 
থিয়েট্রিক্যালে দেখে প্রেমের প্রতিচ্ছবি। 

ভেসে গেলে বুঝি- 
ঘন হয়ে আসা বসন্তের সিঁড়ি বেয়ে 
নিবিড় উদযাপন শেষে পলাশ চূড়োয়
কেন নেমে আসা 
শহীদমিনারে তলদেশে!
————————————-

তৃষ্ণা 

এক পলিডিপসিয়ায় 
কেউই পেলাম না সঠিক ইঁদারার খোঁজ। 
বিরাট পদক্ষেপে উল্টে 
রেখে আসছি চীনের মন্বন্তর। 
আপেক্ষিকতার তত্ত্বে 
ইন্ট্যাঞ্জিবলে কোশেন্ট এলে আইনস্টাইন, 
গ্যালনের পরিবর্তনশীল পরিমাপে, 
তুমিও ফেল!
প্রহেলিকা, আমার দেহ ক্রমশ মরুভূমি  
গজিয়ে ওঠা ক্যাকটাসে 
তৃষ্ণার নয়া অভিরূপ 
হারিয়ে ফেলছে মরুদ্যানের স্বপ্ন।
——————————————-

কৌমুদী কীর্তনে 

সান্ধ্য হাস্নুহানার রহস্য 
সেঁদিয়ে যাচ্ছে রক্তে 
একটা কৃষ্ণপক্ষের পর করপুট 
ধীরে খোলো, চাঁদ 
ড্রয়ারে ব্রজবের বাঁশি 
তরঙ্গের খাদ ভুলে, 
ভরে নিলে শ্বাস 
হাই-নোটে কতটা সময়? 

ভ্রমরের আকণ্ঠ তৃষা- 
কাননের খোলা বুকদরজায় 
আজন্ম ভিড়- 
মাঝে বোধের পাল্টানো রঙে 
ঝাঁপের পঞ্জিকা-  

এই নিশ্চিত রাত্রির 
দুঃস্বপ্নবন্দর ছিঁড়ে
আসবো যে-  
দাঁড়াও আতশি,  
এখনও বন্ধক আছে পাখা।
—————————————

হাওয়ায় পাণ্ডুলিপি 

নো রেটোরিক প্লিজ -
স্মার্ট থেকে আলট্রা স্মার্ট!

বস্তাপচাদের পাল্টে দেওয়ার হিড়িকে 
মনোরমারা লুকোচ্ছেন। 
'অন্দরমহল' আর লেক্সিকনে থাকবে কিনা 
অভিধানবিদেরা এ বিতর্কে যেতেই পারেন। 

সুপারসনিক সময়ে 
সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে অন্তর্বাস 
স্লিম ছেড়ে এখন সুপার-স্লিম  
শামুকেরা এ অভিযোজনে ঘরমুক্ত না হলে 
ডাইনোসরের পাশে হতে পারে সংরক্ষণ। 

পেয়াঁজ ছাড়াচ্ছে শব্দরা;
ঝুলি থেকে নতুন অ্যালয় বের করে কবি, 
মহলের চাঞ্চল্য মাপছেন। 

খুঁজছি সেই কুড়ানিয়ালা 
ভাঙা সানকির সাথে 
নিয়ে যাবে আমার পাণ্ডুলিপি।

 

-কলকাতার বিশিষ্ট কবি 

 

এমএম/