বম পার্টির সঙ্গে জঙ্গিদের চুক্তি: ভয়াবহ বর্ণনা দিলো র্যাব
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২৮ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২২ শুক্রবার

বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে দশজনকে গ্রেপ্তারের পর পাহাড়ের সশস্ত্র দল ‘কেএনএফ’ বা বম পার্টির সঙ্গে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায়’ চুক্তির খবর সামনে এনেছে র্যাব।
র্যাব জানিয়েছে, কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ এর প্রতিষ্ঠাতা নাথান বমের সাথে ২০২১ সালে জামাতুল আনসারের আমীরের সমঝোতা হয়। পার্বত্য অঞ্চলে কেএনএফ এর ছত্রছায়ায় জামাতুল আনসার সদস্যদের ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তাদের মধ্যে চুক্তিও হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে তিন লাখ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি কেএনএফ এর সদস্যদের খাবার খরচ বহন করে জামাতুল আনসার।
গ্রেপ্তার দশজনের মধ্যে তিন পাহাড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ তথ্য মিলেছে।
শুক্রবার বান্দরবান র্যাব ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, নতুন ওই জঙ্গি দলের যে সদস্যদের এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের ছত্রছায়ায়’ প্রশিক্ষণ এবং সশস্ত্র কর্মকাণ্ডের তথ্য তারা পেয়েছিলেন।
এর ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির সাইজামপাড়া ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি বাজার এলাকায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার নেতৃত্বে র্যাব-৭ ও র্যাব-১৫ অভিযান চালায়। সেই অভিযানে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন– সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মৃত সৈয়দ আবুল কালামের ছেলে সৈয়দ মারুফ আহমদ ওরফে মানিক (৩১), পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার মো. শাহ আলমের ছেলে ইমরান হোসাইন ওরফে সাওন (৩১), ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার মৃত গোলাম কিবরিয়ার ছেলে কাওসার ওরফে শিশির (৪৬), সিলেটের বিয়ানিবাজারের ফজলুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আহম্মেদ ওরফে জনু (২৭), বরিশালের মুলাদির নয়ন মৃধার ছেলে ইব্রাহিম ওরফে আলী (১৯), সিলেটের গোলাপগঞ্জের আতিকুল আলমের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে বাপ্পি (২৩), সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকের আব্দুস সালামের ছেলে রুফু মিয়া (২৬)।
এছাড়া বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার লাল মুন সয় বমের ছেলে জৌথান স্যাং বম (১৯), লাল মিন সম বমের ছেলে স্টিফেন বম (১৯) এবং জিক বিল বমের ছেলে মাল সম বমকেও (২০) গ্রেপ্তার করার কথা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন গ্রেপ্তারদের মধ্যে পাহাড়ের তিনজন কেএনএফ এর সামরিক শাখা কেএনএ-এর সদস্য বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। আর বাকিরা জঙ্গি দল জামাতুল আনসারের কর্মী।
তাদের কাছ থেকে ৯টি বন্দুক, ৫০ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ৬২টি কেইস কার্তুজ, ৬টি হাত বোমা, ২টি কার্তুজ বেল্ট, ১টি দেশীয় পিস্তল, বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র, ওয়াকিটকি, ও মানচিত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধারের হিসাব দেওয়া হয় র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে।
এসএ/