ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৪ ১৪৩২

শার্শার পল্লীতে আঙ্গুর চাষে সফল মহাসিন আলী  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪৬ পিএম, ৩১ অক্টোবর ২০২২ সোমবার

যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়নের ইছাপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ভারতীয় চয়ন জাতের আঙ্গুর ফলের চাষ শুরু করে সফল হয়েছেন মহাসিন আলী (৩৫) নামের এক চাষী। প্রতিদিন মানুষ আঙ্গুর বাগান দেখতে ভীড় করছেন ওই চাষির জমিতে। বছরে তিনবার ফলন ধরে আঙ্গুর গাছে। প্রথম ধাপে কম ফলন হলেও পরবর্তীতে প্রত্যেক গাছে প্রায় ২/৩ মণ আঙ্গুর বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।

উপজেলার ইছাপুর গ্রামের মহাসিন আলী ১৫ শতাংশ জমির উপর এই দৃষ্টিনন্দন আঙ্গুর বাগান গড়ে তুলেছেন। যার প্রায় গাছের ব্যাপক ফলন দেখা যায়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভাইরাসের কারনে কিছু আঙ্গুরে কালো স্পট দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ওই চাষী। এর আগে শার্শার বেশ কয়েক এলাকায় আঙ্গুর চাষ হলেও তা সুস্বাদু ছিল না। তবে মহাসিন আলী এবারই প্রথম এ চাষে সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন। জমিতে গাছ রোপনের মাত্র ২/৩ মাসে ফল আসতে শুরু করে।

স্বাদের দিকে কিছু আঙ্গুর প্রচণ্ড টক আবার কিছু আঙ্গুর সুস্বাদু মিষ্টি। মহাসিন আলী মিষ্টি ও সুস্বাদু আঙ্গুর চাষ করে প্রমাণ করলেন এই মাটিতে মিষ্টি ও সুস্বাদু আঙ্গুর উৎপাদন সম্ভব। স্থানীয়রা বাণিজ্যিকভাবে এই আঙ্গুর চাষ করলে এটি একটি জনপ্রিয় ফল চাষ হয়ে দাঁড়াবে। সেই সঙ্গে আঙ্গুর চাষ লাভজনক বাণিজ্যে রূপ নেবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে। তার দেখাদেখি এখন শার্শায় অনেকে আঙ্গুর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

মহাসিন আলী বলেন, ইউটিউবে গত এক বছর আগে দেখেছিলাম বাংলাদেশের মাটিতে মিষ্টি সুস্বাদু আঙ্গুর চাষ হচ্ছে। তারপর থেকে আমার আগ্রহী হয়। গত বছর ২০২১ সালের শেষ দিকে জমি পরিচর্যা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত নেই ১৫ শতাংশ জমির উপর আঙ্গুর চাষ করবো। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঝিনাইদহ জেলা থেকে ভারতীয় চয়ন জাতের চারা সংগ্রহ করে ৩৬টি চারা রোপণ শেষে পরিচর্যা শুরু করি। পরিচর্যায় শুধু পানি ও জৈব সার ব্যবহার করেছি। চারা রোপনের মাত্র তিন মাসেই গাছে ফুল আসে এবং আট মাসের মধ্যেই প্রতিটি গাছে আঙ্গুর চলে আসে। বর্তমানে তার খরচ হয়ছে ৯০ হাজার টাকার মতো।

তিনি আরও বলেন, এ আঙ্গুর বাজারজাত করার মতো পরিপক্ক হলে অবশ্যই মিষ্টি সুস্বাদু হবে এবং মিষ্টি আঙ্গুর ফলের গাছ থেকে বিপুল পরিমানের চারা গাছ তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও সরবরাহের পরিকল্পনা চলছে। স্থানীয়ভাবে আঙ্গুর চাষ হলে ফরমালিনমুক্ত ও কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়া মানসম্মত ফল পাওয়া যাবে। তার দাবী বাজারে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন জাতের আঙ্গুরের চেয়ে তার জমির আঙ্গুর অনেক ভালো। সরকারি ও বেসরকারিভাবে চাষীদের মধ্যে আঙ্গুর চাষের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার মাধ্যমে সহযোগিতা করা হলে অল্প সময়ে আর্থিক লাভবান এবং গ্রামের বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথ সুগম হবে বলে মনে করেন চাষী মহাসিন আলী।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মণ্ডল বলেন, আমরা আঙ্গুর চাষের খবরটি শুনেছি। শোনার পর প্রাথমিকভাবে তাকে পরামর্শও দিচ্ছি। সরকারি দিক নির্দেশনা আছে। যদি সেই মোতাবেক ফলাফল ভালো হয় তখন আমরা সরকারি ভাবে বলতে পারি আঙ্গুর চাষের বিষয়টি। এখন আঙ্গুর চাষে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাদ বাড়ানো যায় কিনা চেষ্টা করতে হবে। এ বিষয়ে কৃষক মহাসিনকে সব সময় কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান। 
কেআই//