ঢাকা, শুক্রবার   ১১ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৬ ১৪৩১

কে এই তৃতীয় নারী, যার জন্য হৃদয় ভাঙল সানিয়ার!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:০৮ পিএম, ১১ নভেম্বর ২০২২ শুক্রবার

সানিয়া মির্জা, আয়েশা ওমর ও শোয়েব মালিক

সানিয়া মির্জা, আয়েশা ওমর ও শোয়েব মালিক

কানাঘুষা চলছিল অনেক দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত সিলমোহর পড়ল তাতেই। ফাটল ধরেছে ক্রীড়া দম্পতি সানিয়া মির্জা আর শোয়েব মালিকের দাম্পত্যে। শোনা যাচ্ছে, তারা নাকি আর এক সঙ্গে থাকতে চান না!

কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইতোমধ্যে নাকি বিচ্ছেদের মামলাও দায়ের করেছেন দম্পতি। যদিও এই সব জল্পনা অস্বীকার করেছেন সানিয়ার বাবা। তবে ভারত ও পাকিস্তানের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, সানিয়া-শোয়েবের বিয়ে ভাঙছে।

তার মাঝেই প্রশ্ন উঠেছে- বিচ্ছেদের কারণ কী? আর এটা নিয়েও রয়েছে হাজারো জল্পনা। যদিও এ ক্ষেত্রে অভিযোগের পাল্লাটা নাকি ভারী শোয়েবেরই। শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তানি ক্রিকেটারের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই নাকি সম্পর্ক ভাঙছেন সানিয়া।

কে সেই তৃতীয় নারী, যার জন্য ঘর ভাঙছে শোয়েব আর সানিয়ার? সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাকিস্তানি নায়িকা আয়েশা ওমরের প্রেমে পড়েছেন শোয়েব। বিষয়টি মানতে পারেননি ভারতীয় টেনিস কন্যা।

আয়েশার সঙ্গে কীভাবে পরিচয় হয়েছিল শোয়েবের? জানা গেছে, পাকিস্তানের ‘ওকে’ পত্রিকার এক ফটোশুটে গিয়েই আলাপ হয়েছিল দু’জনের। পাকিস্তানের এই পত্রিকায় মূলত তারকাদের ফ্যাশন, জীবনযাপন নিয়ে আলোকপাত করা হয়। পত্রিকাটির গত বছরের সেপ্টেম্বর সংখ্যাতেই প্রচ্ছদ ছিলেন শোয়েব আর আয়েশা।

আর ওই ফটোশুটের কারণেই নাকি পুরো একটা দিন একসঙ্গে কাটিয়েছিলেন শোয়েব আর আয়েশা। দিনভর ফিটনেস, ক্রিকেট, সিনেমা- এসব নিয়েই নাকি চলেছিল আলোচনা। আর সেই আড্ডার ফাঁকেই চলেছিল ফটোশুট। প্রতিটি ছবিতেই ঘনিষ্ঠভাবে ধরা দিয়েছিলেন শোয়েব ও আয়েশা। সে সব ছবিতেই নাকি স্পষ্ট হয়ে উঠছিল নতুন ‘সম্পর্কের রসায়ন’।

শোয়েব আর আয়েশার সুইমিং পুলের একটি ছবি ভাইরাল হয়। সেখানে পাউডার নীল রঙের স্বচ্ছ শার্ট পরা শোয়েবকে জড়িয়ে রয়েছেন কমলা পোশাকের আয়েশা।

অপর একটা ছবিতে পুলের পানিতে দাঁড়িয়ে শোয়েব। হাত ধরে পুলের পাশে আয়েশা। ভেজা চুলের লাস্যময়ী তাকিয়ে আছেন শোয়েবের দিকে। নিন্দুকেরা বলছেন, প্রেম না থাকলে নাকি এভাবে তাকানো যায় না!

এছাড়া নাইটড্রেস পরেও ফটোশুট করেন আয়েশা ও শোয়েব। নায়িকার হাতে চায়ের কাপ। আর ঘনিষ্ঠ হয়ে তার চুল ঠিক করে দিচ্ছেন শোয়েব। পিছনে অতল সমুদ্র।

বেডরুমেও ফটোশুট করেন শোয়েব-আয়েশা। আর সেই চিত্র দেখেই ভুরু কুঁচকে ওঠে অনেকেরই। ওই ফটোশুট নিয়ে শোয়েব পরে বলেছিলেন, ‘অনেক মজার ফটোশুট ছিল। চিত্র ধারণের সময়গুলোতে আয়েশা আমাকে সহজ করে দিয়েছিলেন। তিনি আমার শিক্ষক!’

আয়েশাও স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, তিনি ক্রিকেটের বড় ভক্ত। শোয়েবের ঢালাও প্রশংসাও করে নায়িকা বলেন, ‘তিনি খুবই ভদ্র এবং মানবিক। আমরা তাকে নিয়ে গর্ব করি।’

তখন শোয়েবের বিষয়ে আরও বেশ কিছু তথ্যও ফাঁস করেন আয়েশা। জানিয়েছিলেন, ফিটনেস নিয়ে শোয়েব খুব খুঁতখুঁতে। ‘পাগল’ বললেও ভুল হবে না।

তবে নিন্দুকরা বলছেন, সেই ফটোশুটের পর থেকেই নাকি দু’জনের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। প্রায়ই দেখা করেছেন তারা। রেস্তোরাঁ, কফি শপেও নাকি দেখা গিয়েছিল দু’জনকে।

তবে শুধু আয়েশা নয়, অপর এক পাকিস্তানি অভিনেত্রীর সঙ্গেও নাম জড়িয়েছিল পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের। তিনি ‘হামসফর’ সিরিয়াল খ্যাত অভিনেত্রী মাহিরা খান। শাহরুখের বিপরীতে ‘রইস’ সিনেমাতেও দেখা গিয়েছিল তাকে।

চলতি বছরের গোড়াতেই নাকি সেই সম্পর্ক শুরু হয়। ইনস্টাগ্রাম লাইভে আড্ডায় বসেই আলাপ হয়েছিল দু’জনের। দর্শকরা বলেছিলেন, শো-র মাঝেই নাকি মাহিরার সঙ্গে ফ্লার্ট করছিলেন শোয়েব। তিনি সেই শো-তে মাহিরার এতই প্রশংসা করেছিলেন যে, নায়িকা এক পর্যায়ে বলে ওঠেন, ‘ভাবী কি শো দেখছেন?’

জবাবে শোয়েব মালিক স্পষ্টই জানিয়ে দেন যে, সানিয়া শো দেখছেন। তবে তিনি মাহিরার ভাবী নন। মাহিরা পাল্টা জবাবে বলেছিলেন, তিনি গোটা পাকিস্তানের ভাবী! 

আর সেই শো-র মাঝেই ইনস্টাগ্রামে সানিয়া লেখেন, ‘হ্যাঁ, আমি দেখতে পাচ্ছি, তোমরা কী করছ।’

এরপর থেকেই গুঞ্জন বাড়তে থাকে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের একাংশ দাবি করে যে, মাহিরার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে শোয়েবের। তার মধ্যেই আবার মাথাচাড়া দেয় আয়েশার সঙ্গে সম্পর্কের কথা। যদিও শোয়েব এসব নিয়ে মুখ খোলেননি।

২০১০ সালের ১২ এপ্রিল বিয়ে করেন ভারত ও পাকিস্তানের দুই ক্রীড়া নক্ষত্র। বিয়ের পর একসঙ্গে থাকার জন্য দুবাইকেই বেছে নিয়েছিলেন তারা। সংবাদমাধ্যমের দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই আর এক সঙ্গে থাকছেন না সানিয়া আর শোয়েব।

সানিয়ার নেটমাধ্যমে সাম্প্রতিক কিছু পোস্টে অবশ্য মন ভাঙার কথা রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে শুধুই ছেলের সঙ্গে ছবি দিচ্ছেন সানিয়া। একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, অনেক কঠিন সময় পার করিয়ে দেয় এই মুহূর্ত।

ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে সানিয়া লিখেছেন, ‘ভাঙা হৃদয় কোথায় যায়? ঈশ্বরকে খুঁজতে যায়।’

এসব পোস্টের পর জল্পনা আরও বেড়ে গেছে। এবার নাকি ক্রিকেট ও টেনিসের দুই তারকা হাঁটবেন ভিন্ন পথেই। যাতে পড়তে চলেছে আইনি সিলমোহরও। যদিও সানিয়া বা শোয়েব এ নিয়ে মুখ খোলেননি এখনও।

তবে মুখ খুলেছিলেন সানিয়ার বাবা ইমরান মির্জা। সামাজিকমাধ্যমে একটি লম্বা পোস্টের মাধ্যমে সানিয়া-শোয়েবের সম্পর্কের বিষয়ে সাফাই দেন তিনি।

ফেসবুকে এক পোস্টে সানিয়ার বাবা লিখেছেন, “গত কয়েক দিন ধরে আমাদের জীবনের একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে নিয়ে প্রকাশ্যে অনেক আলোচনা হচ্ছে, যাতে আমি এবং আমার পরিবার বিধ্বস্ত। অর্ধেক সত্যের দ্বারা তৈরি হওয়া আমাদের জীবনের একটি বিষয়কে নিয়ে অনেকেই আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বিরক্ত করছেন এবং একের পর এক প্রশ্নের দ্বারা উত্ত্যক্ত করছেন। শোয়েব মালিক এবং সানিয়া মির্জা গত ১২ বছর ধরে বিবাহিত জীবন কাটাচ্ছে। বাকিদের মতোই ওদের জীবনেও ওঠানামা রয়েছে। টম, ডিক, হ্যারির মতো কিছু কিছু ব্যক্তি সেটাকে নিয়ে উত্তেজক কাহিনী তৈরির করার চেষ্টা করছেন, যা আমরা কোনও মতেই সমর্থন করি না।”

ইমরান মির্জা আরও লিখেছেন, “জীবনের সব উত্তর হ্যাঁ বা না-তে হয় না। ক্রীড়াজগতে ওরা দু’জনেই আদর্শ। পরিবারের কথা মাথায় না রেখে নিজেদের গোটা জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছে দেশকে গর্বিত করতে। ওরা অন্তত আরও বেশি সমীহ প্রত্যাশা করে। এখন অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ চলছে! দয়া করে নিজেদের দেশকে সমর্থন করার দিকে মনোযোগ দিন!”

এনএস//