ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২০ ১৪৩১

প্রতিবন্ধীদের সমাজের মূলধারায় আনতে দরকার সবার সহযোগিতা (ভিডিও)

স্মৃতি মন্ডল, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৪ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার | আপডেট: ১২:২৬ পিএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার

রাষ্ট্রের পাশাপাশি সমাজের সবাই এগিয়ে আসলে প্রতিবন্ধীদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব। প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিবার বলছে, এজন্য সবার ইতিবাচক মনোভাব জরুরি। দেশে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী ২৯ লাখেরও বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহযোগিতা পেলে তারাও অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে। 

দৃষ্টি শক্তি না থাকলেও অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানে সব প্রতিবন্ধকতা। ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে শিক্ষক হবার স্বপ্ন নাহিদ, মানহার। 

নাহিদ জানায়, শিক্ষকরা তাকে যেভাবে শেখাচ্ছেন, ঠিক সেভাবেই তিনিও যেন পরবর্তী প্রজন্মকে শেখাতে পারেন, সেটাই তার ইচ্ছা।    

মামনহা বলে, “যতটুকু আমি অর্জন করতে পেরেছি, ততটুকুই দান করতে চাই এবং মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে চাই।”

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জহিরুল ইসলাম সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জানান, সহযোগিতা পেলে প্রতিবন্ধীরাও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে।

জহিরুল ইসলাম একুশে টেলিভিশনকে বলেন, “কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি পর্যায়ে যারা আছেন, তাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ গার্মেন্টস সেক্টর আছে, কর্পোরেট সেক্টর, তারা কিন্তু বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে। সবার সহযোগিতা মানে কিন্তু এই না যে, তার কাজটা সে করে দিবে, শুধু আমরা মানসিকতা কিন্তু একটু চেঞ্জ করতে পারি।”

সিয়াম ও সিফাত দুই ভাই-ই বাক প্রতিবন্ধী। দুই সন্তানকে নিয়ে মায়ের লড়াই। প্রতিবন্ধীদের ভবিষ্যৎ যাতে সহজ হয় সেজন্য পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ তৈরি করা দরকার বলে মনে করেন এই মা।

তিনি বলেন, “বেশিরভাগ প্রতিবন্ধী বাচ্চাদেরই কিন্তু ওদের বাবা-মাকে হয়ত কিছু একটা করে দিতে হচ্ছে। যারা পারছে না তাদেরকে অসহায় জীবন যাপন করতে হচ্ছে। “

ডাউন সিনড্রোম নিয়ে জন্ম নেয়া শাহরিয়ার হাসান কাছে পেতে চায় বাবাকে। প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত শাহরিয়ারের মা।

এই নারী জানান, স্বামী তার শামুড়িকেই বলেছিলেন, পরের বাচ্চাটাও নাকি এমন হবে। এরপরই তারা তাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়।

শিশু শাহরিয়ার জানায়, বাবা তাকে ফোন করে না, তার ফোন ধরেও না।   

সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ অনুযায়ী, ১২ ধরণের ২৯ লাখ ৪২ হাজারের প্রতিবন্ধী বাংলাদেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী ১৪ লাখেরও বেশি। এরপরেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৪ লাখের বেশি। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ২ লাখের বেশি, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে। প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। 

জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আমিন খান বলেন, “প্রতিবন্ধীদের আগে আমরা আইডেন্টিফাই করছি। বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রতিবন্ধী আছে। প্রথমেই তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি, তাদের থেরাপি দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থা করছি। পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের, ঋণদানের বা অনুদানের চেষ্টাও করছি।”

প্রতিবন্ধীদের সাথে নিয়ে পথ চলব; দেশকে এগিয়ে নেব- প্রতিবন্ধী দিবসে এই অঙ্গীকার হউক সবার।