ঢাকা, শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৬ ১৪৩১

আফ্রো-আরবিয় রূপকথার রূপকার মরক্কোর জয়রথ ছুটছেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২২ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার

উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলাই যাদের জন্য অনেক বড় অর্জন। কিন্তু কাতারে যেন ইতিহাস গড়তেই এসেছে আফ্রো-আরবিয় দেশটি। এক পা দুই পা করে তারা পৌঁছে গিয়েছিলো কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে সেখানেই থামেনি তারা। বরং এবার তারা যা করে দেখালো, তা ইতিহাসকেও হার মানিয়েছে। 

জন্ম দিয়েছে আফ্রিকান রূপকথার। সেই সঙ্গে আরব দেশগুলোর ফুটবল-বিপ্লবেও নেতৃত্ব দিচ্ছে মরক্কানরা।

২০২২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে শনিবার রাতে আল থুমামা স্টেডিয়ামে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে মরক্কো। এই জয় তাদের ইতিহাসে স্থায়ীভাবে জায়গা করে দিয়েছে। কারণ প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলো মরক্কানরা। 

এর আগে আফ্রিকান দলগুলো বড়জোর কোয়ার্টার পর্যন্ত খেলতে পেরেছিল। ১৯৯০ বিশ্বকাপে ক্যামেরুন, ২০০২ বিশ্বকাপে সেনেগাল এবং ২০১০ বিশ্বকাপে ঘানা শেষ আট থেকে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু মরক্কো তাদের সবার কীর্তিকে ছাড়িয়ে গেল এবার।  

মরক্কোর কীর্তিগাঁথা যুগ যুগ ধরে আফ্রিকান ফুটবলে উচ্চারিত হবে। যার শুরুটা তারা করেছিলো গ্রুপ পর্বে। প্রথমেই তারা ২০১৮ বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াকে রুখে দেয়। গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ হয় ম্যাচটি। এরপর ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল বেলজিয়ামকে হারায় ২-০ গোলে। শেষ ম্যাচে কানাডাকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠে শেষ ষোলোয়। তাদের কারণে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় বেলজিয়ানরা।  

শেষ ষোলোয় মরক্কোর শিকার হয়ে বিদায় নেয় ২০১০ বিশ্বকাপজয়ী স্পেন। টাইব্রেকারে গড়ানো ম্যাচে স্প্যানিশরা একবারও তাদের জাল ভেদ করতে পারেনি। তাদের গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো দেয়াল হয়ে দাঁড়ান স্প্যানিশদের সামনে। আর শেষ আটে পর্তুগালের মতো দলকে হারিয়ে দিয়েছে তারা। তিন ভাগের বেশি সময় বল দখলে রেখেও মরক্কোর গোলমুখ খুলতে পারেনি পর্তুগিজরা। ফলে কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরা। অন্যদিকে রূপকথার জন্ম দিয়ে মাঠ ছাড়লেন হাকিমি-জিয়াচরা।

শুধু আফ্রিকান হিসেবেই নয়, আরব দেশগুলোর মধ্যেও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠা প্রথম দল মরক্কো। এর আগে এই মরক্কো ১৯৮৬ বিশ্বকাপে, সৌদি আরব ১৯৯৪ বিশ্বকাপে এবং আলজেরিয়া ২০১৪ বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় উঠেছিল; যা এতদিন আরবদের সেরা সাফল্য ছিল। আর মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মধ্যে সেরা সাফল্য ছিল তুরস্কের। ২০০২ জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল তারা। সেমিতে ব্রাজিলের কাছে ০-১ গোলে হারের পর স্থান নির্ধারনী ম্যাচে কোরিয়ানদের হারিয়ে তৃতীয় হয়েছিল তুর্কিরা। এবার তাদের সেই কীর্তি স্পর্শ করল মরক্কো।

এবার আরবের প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেই ইতিহাস গড়ে কাতার। কিন্তু মাঠে তারা কোনো সাফল্য পায়নি। আয়োজকরা না পেলেও এবার প্ররথম বিপ্লব ঘটায় সৌদি আরব। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তারা হারিয়ে দেয় আসরের অন্যতম ফেভারিট আর্জেন্টিনাকে। এছাড়া ডেনমার্কের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে আফ্রিকার আরেক আরব দেশ তিউনিসিয়া। এই দলগুলো অবশ্য আর কোনো সাফল্য পায়নি। কিন্তু মরক্কো টিকে আছে বীরদর্পে।

এনএস//