ঢাকা, সোমবার   ২০ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

আব্দুর রহমানের মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা

 নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৫১ এএম, ১৮ মার্চ ২০২৩ শনিবার

মেধাবী শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান এবার মেডিকল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে দুশ্চিন্তায় তার পরিবারে। দেখা দিয়েছে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা।

জানা যায়, যতসামান্য কৃষি জমি থেকে স্বল্প আয় দিয়ে ছয় সদস্যের পরিবারের সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলে আব্দুর রহমানের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে আসছেন তার কৃষক বাবা। 

আব্দুর সালাম ও সামেছা বেগম দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে আব্দুর রহমান দ্বিতীয়। আব্দুর রহমান সাপাহার উপজেলার আল হেলাল ইসলামী একাডেমি এন্ড কলেজ থেকে জেএসসিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসিতে জিপিএ-গোল্ডেল এ প্লাস পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। 

এরপর রাজশাহী নিউ গর্ভমেন্ট ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতেও গোল্ডেন এ প্লাস অর্জন করেন আব্দুর রহমান। এবারে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত তিনি।

আব্দুর রহমান বলেন, “আমার বাবার তেমন কোন সম্পদ নেই। দাদার কাছে থেকে দেড় বিঘা জমি পেয়েছেন বাবা। সেই জমিতে চাষাবাদ করে কোন রকমে সংসার এবং আমার লেখাপড়া খচর চালিয়েছেন। আমাকে নিয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন, একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগের মধ্যদিয়ে সেই স্বপ্নের দুয়ার খুললেও অর্থ সংকটের কারণে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়েছে আমার পরিবারকে।”

“চলতি মাসের ২৭ তারিখ ভর্তির সময় দিয়েছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিভাবে অল্প সময়ের মধ্যে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিবে আমার পরিবার।”

আব্দুর রহমানের বাবা আব্দুর সালাম বলেন, “আল্লাহ্'র কাছে শোকরিয়া আদায় করছি, তিনি আমার ছেলেকে ডাক্তার হওয়ার একটি সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি গরীব মানুষ, যতসামান্য জমিতে চাষাবাদ ও কৃষি কাজ করে সংসার এবং ছেলের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে আসছি। এখন ছেলেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করাতে হবে। ভর্তির জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা যোগার করা আমার জন্য খুবই কঠিন। ”

সাপাহার আল হেলাল ইসলামী একাডেমি এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুর আলম বলেন, “আব্দুর রহমান একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। সে অত্র বিদ্যালয় হতে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে। বর্তমানে আব্দুর রহমান মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার এই কৃতিত্বে আমরা গর্বিত। তার ভর্তির বিষয়ে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা হলে, তিনি বলেন, “মেডিকেলে ভর্তির বিষয়ে আব্দুর রহমানের পরিবার যদি কোনো রকম কোনো সহযোগিতা চেয়ে যোগাযোগ করে, তা যাচাই করে সরকারি সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।”

এএইচ