ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বুদ্ধ বাণী

‘জীবদ্দশার ভালো কাজ মৃত ব্যক্তিকে মাখনের মতোই ওপরে উঠাবে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:০৮ পিএম, ১৮ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:০৩ পিএম, ১৮ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার

আপনি জানেন মে মাস ধ্যানের মাস। একুশে মে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস পালিত হবে । বাংলায় ধ্যানচর্চার মহত্তম পুরুষ মহামতি বুদ্ধ বৈশাখী পূর্ণিমায় এই মে মাসে জন্মগ্রহণ করেন এখন থেকে আড়াই হাজার বছর আগে।

আমরা জানি, তার জন্ম রাজপরিবারে। এবং সে-সময় ইতিহাসের এক অস্থির সময়। রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক পালাবদল ঘটছিল খুব দ্রুত। তখন লোহার বহুমুখী ব্যবহার আয়ত্ত করছে মানুষ। নতুন নতুন কৃষিপণ্য উদ্ভাবন ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটার ফলে নগর সৃষ্টি হচ্ছে- বারানসি, রাজগৃহ, শ্রাবস্তী, কপিলাবস্তু।

ব্যক্তি ও সমাজজীবন যে প্রাচীন মূল্যবোধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতো, গাঙ্গেয় সভ্যতার সেই চেনা কাঠামো ভেঙে পড়তে লাগল! মানুষ লোভ-লালসা বিলাস ও বিলাসী পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বর্ণবাদ সমাজ জীবনের ওপর কঠিনভাবে চেপে বসছিল।

একধরনের আত্মিক শূন্যতা চারপাশে। মানবিকতা মানবিক মূল্যবোধ ভোগবিলাসের তাপ ও চাপে যখন বিপর্যন্ত তখন মহামতি বুদ্ধের আবির্ভাব ঘটে শান্তি দয়া করুণার বাণী নিয়ে!

রাজগুরুর ভবিষ্যদ্বাণী- “রাজকুমার সন্ন্যাসী হবে”!

আপনি জানেন মহামতি বুদ্ধের জন্ম রাজপরিবারে। রাজগুরু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে রাজকুমার সন্ন্যাসী হবে। রাজকুমার যাতে সন্ন্যাসী হতে না পারে সেজন্যে রাজা শীতকাল গ্রীষ্মকাল বর্ষাকাল তিনকালের জন্যে তার জন্যে তিনটি প্রাসাদ বানিয়েছিলেন।

এবং বিলাসী জীবনযাপনের জন্যে যা যা অনুষঙ্গ প্রয়োজন সবকিছুই ছিল। যাতে রাজকুমার সন্ন্যাসী না হয়। কিন্তু এই বিলাস-ব্যাসনের মধ্যে থেকেও তার মনে সমাজ-সংস্কারের সংসারের অনিত্যতা অস্থায়িত্ব মানুষের দুঃখ তাকে ভাবিয়ে তুলল।

রাজকুমার মনের দ্বন্দ্ব নিরসন করার জন্যে দুর্দশা অশান্তির কারণ বোঝার জন্যে এবং তা দূর করার জন্যে একরাতে রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করলেন এক কাপড়ে।

ধ্যানে নিমগ্ন হলেন বোধিবৃক্ষের নিচে। এবং একসময় দুঃখের কারণ তিনি শনাক্ত করলেন যে, আসলে আসক্তিই হচ্ছে সকল দুঃখের কারণ। সে আসক্তি যে-কোনোকিছুর হতে পারে। এবং আসক্তির কারণ হচ্ছে ভ্রান্ত জীবনদৃষ্টি ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি।

দুঃখের কারণ হচ্ছে আসক্তি এবং আসক্তির কারণ হচ্ছে অবিদ্যা অজ্ঞতা মূর্খতা সত্যজ্ঞানের অভাব। তিনি অনুভব করলেন মানুষের জীবন থেকে তার অভিপ্রায় তার দৃষ্টিভঙ্গি যদি ঠিক করা যায় তাহলে তার অন্তর আলোকিত হবে সত্যের আলোয়। দুঃখের কারণকে সে নিজেই শনাক্ত করতে পারবে এবং আসক্তি থেকে সে মুক্ত হতে পারবে।

এজন্যে প্রয়োজন সত্যজ্ঞান সত্য জীবনদৃষ্টি সঠিক জীবনদৃষ্টি সঠিক জীবনাচার।

মহামতি বুদ্ধ যখন বোধি লাভ করলেন, সত্যকে অনুভব করলেন, সকল মহামানবের মতো তিনিও এই সত্যবাণী প্রচারের জন্যে সত্যের আলোয় আলোকিত করার জন্যে সমাজের মানুষদের প্রতি আহ্বান জানালেন এবং দ্বারে দ্বারে সত্যবাণী পৌঁছানোর কাজ শুরু করলেন।

মহামতি বুদ্ধের পুরো জীবন তিনি ব্যয় করেছেন মানুষের ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি দূর করার সৎচিন্তা সদ্ভাবনা সৎকর্মে তাকে উদ্বুদ্ধ করার এবং যথার্থ জীবনদৃষ্টি তাকে দেয়ার। যাতে সে তার নিজের জীবনকে দুঃখমুক্ত করতে পারে।

বুদ্ধ ধ্যানী ছিলেন, ধ্যানে নিমগ্ন থাকতেন, ধ্যানে উদ্বুদ্ধ করতেন!

মহামতি বুদ্ধের শিক্ষা খুব সহজসরল। আসলে পৃথিবীতে যত ধর্মপ্রচারক এসছেন তাদের শিক্ষা সবসময় সহজসরল। তারা উদাহরণ দিয়ে ছোট্ট কথায় অল্প কথায় গল্প দিয়ে মানুষকে সত্যের শিক্ষা দিতেন এবং যাকে যেভাবে বললে যেভাবে বোঝালে তিনি বুঝবেন তাকে তিনি সেভাবেই বোঝাতেন। এবং সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেন জ্ঞানের পথে সৎকর্মের পথে।

অর্থাৎ একজনের জীবন যে তার কর্মের সমষ্টি এবং সেই কর্মের ফল তার কর্মের ফল তাকেই ভোগ করতে হবে। এই সহজ সত্যটি তিনি নানানভাবে নানান প্রসঙ্গে এবং হৃদয়গ্রাহী করে উপস্থাপন করেছেন।

আসলে তিনি ধ্যানী ছিলেন তিনি ধ্যানে নিমগ্ন থাকতেন ধ্যানে উদ্বুদ্ধ করতেন। এই ধ্যান মানুষকে সৎকর্মের পথে সৎ ভাবনার পথে সৎ অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যে।

একবার এক তরুণ মহামতি বুদ্ধের সাথে দেখা করতে এলো। তরুণ খুব বিমর্ষ।

মহামতি বুদ্ধ জানতে চাইলেন কী হয়েছে? সে বলল আমার বাবা গতকাল মারা গেছেন, আপনার কাছে বিশেষ আবেদন নিয়ে এসছি আমার মৃত বাবার জন্যে কিছু করুন।

সাধারণ পূজারিরা তার জন্যে প্রার্থনা করলে পূজা অর্চনা করলে তিনি স্বর্গে যাবেন। কিন্তু আপনার মতো মহান কেউ যদি তার জন্যে প্রার্থনা করে তাহলে বাবার জন্যে স্বর্গের অনেক বড় কিছু একেবারে নিশ্চিত। মহামতি বুদ্ধ! আপনি দয়া করুন বাবার জন্যে কিছু করুন। তরুণ আবেগপ্রবণ হয়ে গেল।

বুদ্ধ বললেন, বাজার থেকে দুটো মাটির হাঁড়ি কিনে নিয়ে আস!
মহামতি বুদ্ধ বুঝলেন যে, এখন কোনো যুক্তি তার মাথায় ঢুকবে না। যুক্তি বোঝার মতো অবস্থায় সে নেই।

বুদ্ধ চিন্তা করলেন যুবককে বললেন, বাজার থেকে দুটো মাটির হাঁড়ি কিনে নিয়ে আস।

যুবক মনে মনে খুশি হলো যে একটা কিছু হবে। মহামতি বুদ্ধ তার প্রয়াত বাবার জন্যে নিশ্চয়ই কিছু একটা করবেন তা না হলে হাঁড়ি আনতে বলবেন কেন? যুবক বাজারে গেল সুন্দর দেখে দুটো হাঁড়ি নিলে এলো। সে-সাথে লাল কাপড়। যখন হাঁড়ি নিয়ে যুবক বুদ্ধের কাছে এলো মহামতি বুদ্ধ বললেন এবার একটা হাঁড়ি মাখন দিয়ে আরেকটা হাঁড়ি নুড়ি-পাথর দিয়ে ভরো। তারপর এই কাপড় দিয়ে খুব শক্ত করে হাঁড়ির মুখ বেঁধে দাও।

বাঁধা শেষ হলো। তিনি বললেন এই যে সামনে পুকুর হাঁড়ি দুটো পুকুরে ভাসিয়ে দাও।

যুবক খুব তৎপরতার সাথে কাজগুলো করল হাঁড়ি পুকুরে ভাসিয়ে দিল।

এরপর মহামতি বুদ্ধ বললেন, এবার একটা বড় বাঁশ নাও এবং হাঁড়ি দুটো ভেঙে ফেল। বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করার সাথে সাথেই হাঁড়ি ভেঙে গেল। যে হাঁড়িতে মাখন ছিল সে হাঁড়ির থেকে মাখন বেরিয়ে পানিতে ভাসতে লাগল। আর নুড়ি-পাথর যে হাঁড়িতে ছিল হাঁড়ি থেকে নুড়ি-পাথরগুলো বের হয়ে পুকুরের নিচে ডুবে গেল।

যুবক বলল, আপনি কি আমার সাথে রসিকতা করছেন?

এবার মহামতি বুদ্ধ তরুণকে বললেন যে, দেখ আমার কাজ আমি করেছি। এবার তুমি পুরোহিতদের ডাক। তুমি পূজারিদের ডাক তারা যেন প্রার্থনা করে হে নুড়ি-পাথর তলানি থেকে ওঠে আস ওপরে আর হে মাখন ডুবে যাও পুকুরের অতলে।

তরুণ যুবক বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে মহামতি বুদ্ধের দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর কিছুক্ষণ পরে বলল, হে মহামতি, আপনি কি আমার সাথে রসিকতা করছেন! এতো প্রকৃতির নিয়মবিরুদ্ধ। পাথর যেমন পানির ওপরে ভাসতে পারে না, মাখনও তেমনি পানির নিচে যেতে পারবে না।

বুদ্ধ বললেন, তোমার বাবার জীবদ্দশার ভালো কাজ মাখনের মতোই তাকে ওপরে উঠাবে!

মহামতি বুদ্ধ তখন বললেন, তুমি প্রকৃতির এই সূত্র জানো অথচ একবার ভেবে দেখলে না যে এটা এই সূত্র সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। প্রকৃতির সবকিছুই নিয়মের মধ্যে চলে।

দেখ যুবক, তোমার বাবা যদি মন্দ কাজ করে থাকেন। নুড়ি-পাথরের মতোই তিনি ডুবে যাবেন অতলে। অন্য কেউ তাকে টেনে তুলতে পারবে না। আর যদি জীবদ্দশায় ভালো কাজ করে থাকেন, মাখনের মতোই তিনি ওপরে উঠবেন। তাকে কেউ টেনে নামাতে পারবে না।

মহামতি বুদ্ধের জীবনের এ ঘটনা মহানামা শাক্যকে দেয়া উপদেশ পথমা মহানামা সুত্তে গ্রন্থিত।

আসলে মানব চরিত্রের একটা মিথ্যা আশা হচ্ছে যে, আমাদের পরিত্রাণের দায়ভার অন্য কারো। নিজের আচরণ নিজের কর্ম নিজের ভাবনা নিজে বদলানোর কোনো চেষ্টা করব না, আরেকজন এসে উদ্ধার করবে।

আসলে আরেকজন তখনই আপনাকে উদ্ধার করতে পারে যখন আপনি ভেতর থেকে উদ্ধার পেতে চাইবেন। আপনি নিজে বদলাতে চাইবেন তখন আরেকজন উদ্ধার করতে পারে। আরেকজনের কর্ম তার জন্যে কল্যাণ বয়ে আনবে আরেকজনের কর্ম আপনাকে উদ্ধার করবে না।

আসলে মহামতি বুদ্ধ এবং সকল মহামানব সবসময় মানুষকে এই শিক্ষা দেয়ারই চেষ্টা করেছেন। এই শিক্ষাই দিয়েছেন যে, তোমার পরিণতি নির্ভর করে তোমার কাজের ওপর তুমি সচেতন হও তুমি তোমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাও। তোমার অভিপ্রায়কে পেছনে সুচিন্তা কাজ করুক। তাহলে সুখ তোমাকে অনুগমন করবে আর যদি তোমার চিন্তাভাবনা মন্দ অভিপ্রায় দ্বারা পরিচালিত হয় তাহলে দুঃখ তোমাকে ছায়ার মতো অনুসরণ করবে।

আমরা খুবই আনন্দিত, বাংলার এই মহামানব মহামতি বুদ্ধ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রথম বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। প্রথম সাহসী কণ্ঠস্বর ছিলেন।

তখনকার ঘোর বর্ণবাদী সমাজে তিনি বলেছিলেন জন্মে নয় মহত্ত হচ্ছে কর্মে। কর্ম মানুষকে ব্রাহ্মণ করে কর্ম মানুষকে অচ্ছুত করে এবং সে-সময়কার নিম্নবর্ণের মানুষকে তিনি মানুষের মর্যাদায় সমমর্যাদায় আসীন করেছিলেন।

একদিন তিনি মগধের রাজধানী রাজগৃহের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ঝাড়ু হাতে রাস্তা পরিষ্কার করছিল মেথর সুনীত। সে ছিল নমশুদ্র অস্পৃশ্য। তার ছায়া মাড়ালেও উচ্চবর্ণের মানুষকে স্নান করতে হতো। স্নান করে শুচি হতে হতো।

মহামতি বুদ্ধকে দূর থেকে আসতে দেখেই সুনীত দুই হাতজোড় করে সসংকোচে রাস্তা থেকে সরে দাঁড়ালো। যাতে তার ছায়া মহামতির গায়ে না পড়ে।

মহামতি তাকে ডাকলেন কাছে আদর করে বললেন যে তোমার এই সংকোচের কোনো কারণ নাই। তুমিও আমার মতোই মানুষ!

হতচকিত সুনীত জিজ্ঞেস করল আমি কী আপনার মতো হতে পারব? আমি কি আপনার মতো হতে পারব? মহামতি বুদ্ধ বললেন কেন নয়, আস আমার সাথে। মহামতি বুদ্ধ তাকে রাজগিরের বিহার বেনুবনে নিয়ে গেলেন দীক্ষা দিলেন। সুনিত সাধনা করতে করতে ভিক্ষুদের সর্বোচ্চ স্তর অড়হৎ। অড়হৎ স্তরে নিজেকে উন্নীত করেছিলেন। তার মর্যাদা অন্য সকল অড়হতের মতোই সমপর্যায়ের ছিল।

আসলে বুদ্ধ সাম্যের কথা মানবিকতার কথার প্রজ্ঞার কথা জ্ঞানের কথা ধ্যানের কথা সাধনার কথা অকাতরে বলেছেন এবং খুব সহজভাবে সহজ বোধগম্যভাবে বলেছেন।

এমনকি মহাপ্রয়াণের সময়ও তিনি কর্মব্যস্তই ছিলেন। উপদেশ দিতে দিতে তিনি মহাপ্রয়াণ করেন। তার খুব প্রিয় শিষ্য আনন্দের দিকে তাকিয়ে বললেন আনন্দ তুমি হয়তো চিন্তা করছ যে আমার গুরুর বাণী এখন অতীত হয়ে যাবে। আমাদের গুরু বলে আর কেউ থাকলেন না।

কিন্তু আনন্দ তুমি এটাকে এভাবে দেখ যে আমি যখন থাকব না তখন আমি যে ধম্ম এবং জীবনাচার রেখে যাচ্ছি এই ধম্ম এবং জীবনাচারই তোমার শিক্ষক হিসেবে কাজ করবে। আসলে কাজ করতে করতেই উপদেশ এবং পরামর্শ দানের মধ্য দিয়ে তার মহাপ্রয়াণ ঘটে।

অর্থাৎ জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি উপদেশ দিয়ে গেছেন। মানুষের ভক্তদের কল্যাণের চিন্তায় শিষ্যদের কল্যাণচিন্তায় এবং আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ার প্রচেষ্টায় তার শিষ্যদেরকে সঙ্ঘে একীভূত করার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

কত প্রাসঙ্গিক তার জীবনের আরেকটি ঘটনা। মহামতি বুদ্ধ বোধি লাভ করার পর একবারই রাজার অনুরোধে তার পিতার অনুরোধে ঘরে এসছিলেন। তখন তার স্ত্রী তার পুত্র রাহুলকে বলেছিলেন বুদ্ধের অনেক সম্পদ আছে যাও তার কাছ থেকে চেয়ে নাও।

বালক রাহুল পিতার কাছে সম্পদ চাইলে বুদ্ধ বলেছিলেন, আত্মদীপ ভবঃ। অর্থাৎ নিজেকে প্রজ্জ্বলিত করো।

আসলে এই যে নিজেকে প্রজ্জ্বলিত করা আত্মশক্তিকে জাগানো আত্মোপলব্ধির পথে মানুষকে নিয়ে যাওয়া। আত্মজাগরণের মধ্য দিয়ে অন্তর্জাগরণের মধ্য দিয়ে অবিদ্যা ও অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে প্রথম মুক্তি এবং স্বাধীনতার স্বাদ। এই স্বাদই মহামানবরা যুগে যুগে মানুষকে দিয়েছেন।

মহামতি বুদ্ধ বোধি লাভ করার পরের সমস্ত সময় দুঃখ-যন্ত্রণায় কাতর মানুষের আত্মশক্তি জাগরণের উপায় শিক্ষা দিয়েছেন। ধ্যানের পথে সৎকর্মের পথে তিনি মানুষকে ডেকেছেন এবং তিনি তার নিজের পুত্রকে যে বাণী দিয়েছিলেন আত্মদীপ ভবঃ- নিজেকে প্রজ্জ্বলিত করো।

আসলে একজন মানুষ আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয় নিজের শক্তিকে জাগ্রত করে তখনই সে মুক্তি পায় তখনই সে প্রশান্তি পায় তখনই সে সুখ পায় তখনই সে প্রাচুর্য পায় এবং নিজের অর্জিত শক্তি থেকে যে প্রাচুর্য অর্জিত হয় সেটা কেউ কখনো কেড়ে নিতে পারে না।

এসবি/