ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪,   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কুয়াকাটা সৈকতে ভিড়, আবাসিক হোটেলে নেই পর্যটক

কুয়াকাটা-কলাপাড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:৫৮ এএম, ২০ মে ২০২৩ শনিবার

মোখার প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা করলেও কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীদের হতাশ করেছে পর্যটকরা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কুয়াকাটা সৈকতসহ আশেপাশের পর্যটন স্পটগুলোতে হাজারো পর্যটকের উপস্থিতি থাকলেও হোটেলে নেই পর্যটক। 

শুক্রবার অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে ৭০ শতাংশ রুম ফাঁকা ছিল বলে হোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। 

পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার বন্ধের দিনে ডে ট্যুরে তারা এসেছেন। কুয়াকাটার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত উপভোগ করবেন। এরপর রাখাইন মহিলা মার্কেট ও শুটকী মার্কেটে কেনাকাটা শেষে একদিনের ভ্রমণের ইতি টেনে রাত নয়টার মধ্যেই আবার গন্তব্যে ফিরবেন। 

এমনই প্রস্তুতি নিয়ে এদের কেউ দলবেঁধে বাস ভাড়া করে আবার কেউ এসেছেন হালকা কোন মোটরযান নিয়ে। বেশিরভাগ পর্যটক ঢাকা ও খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের ছিল। 

ঢাকা থেকে আগত শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোঃ রইস উদ্দিন আহম্মেদ একুশে টেলিভিশনের অনলাইনকে বলেন, সাপ্তাহিক ছুটিতে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটা ভ্রমণে এসেছি। পরিবারের পাঁচজন একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে গভীর রাতে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে সূর্যোদয় দেখলাম, সূর্যাস্ত দেখে আবার রাতে ফিরবো। 

খুলনা থেকে আসা একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিক বলেন, আমরা চল্লিশ জনের একটি গ্রুপ বাস রিজার্ভ করে এসেছি। আবাসিক হোটেলে ওঠার পরিকল্পনা নেই, আবার রাতেই ফিরে যাবো। 

এমনসব উক্তি ছিল অগণিত পর্যটকের। ফলে বেশিরভাগ আবাসিক হোটেলের ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা গেছে।

আবাসিক হোটেল কানসাই ইন’র ম্যানেজার জুয়েল ফরাজী জানান, তাদের হোটেলে ২০ রুমের বিপরীতে শুক্রবার পর্যটক উঠেছেন মাত্র ৬ রুমে। একই চিত্র কুয়াকাটার অভিজাত আবাসিক হোটেলগুলোর। 

সরেজমিনে জানা যায়, প্রায় সবগুলো আবাসিক হোটেলে শুক্রবার ছুটির দিনেও ৭০ শতাংশ রুম ফাঁকা ছিল। কুয়াকাটা সিকদার রিসোর্টের এজিএম খান মোঃ আলামিন বলেন, গত সপ্তাহে মোখার প্রভাব এবং চলমান এসএসসি পরীক্ষা থাকায় দূরের পর্যটক তেমন নেই। সৈকতে যেসকল পর্যটকদের দেখা যায় তাদের বেশিরভাগই বরিশাল অঞ্চলের। ফলে তাদের ফিরে যাবার সুযোগ রয়েছে। 

একই মন্তব্য করে হোটেল খান প্যালেসের জিএম ইমন বলেন, সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে পর্যটকদের একটি বড় অংশ একদিনেই ফিরে যাবার পরিবল্পনা নিয়ে কুয়াকাটায় আসেন। 

এদিকে পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবসায়ীদের তেমন প্রভাব পড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন রাখাইন মার্কেটের ঝিনুক ব্যবসায়ী মিলন। তার মতে. ঈদের পর ধারণা ছিল ব্যবসা মন্দা যাবে কিন্তু তুলনামূকক তাদের বেচাবিক্রি ভালই ছিল। 

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (কুটুম) সহসভাপতি কাজী সাঈদ বলেন, পদ্মাসেতুসহ ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগের ফলে কুয়াকটায় পর্যটক বেড়েছে বৈকি আবাসিক হোটেল ব্যবসায় কিছুটা মন্দাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। 

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ হাচনাইন পারভেজ বলেন, কুয়াকাটার বিভিন্ন স্পটে ব্যাপক ট্যুরিস্ট রয়েছে। আবাসিক হোটেলে তাদের খুব কমসংখ্যকই উঠেছেন। চলমান এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে টানা দু’তিনদিন থাকবার পরিকল্পনা নিয়ে তখন অনেকেই আসবেন কুয়াকাটায়। তখন পর্যটনের স্বাভাবিক গতি ফিরবে।  

এএইচ