ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

ঈদের হাট কাঁপাতে প্রস্তুত ৩০ মণ ওজনের ‘বাদশা’

বদরুল হাসান লিটন, রাজশাহী থেকে

প্রকাশিত : ১০:২৭ এএম, ১৫ জুন ২০২৩ বৃহস্পতিবার

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির হাট কাঁপাতে প্রস্তুত বিশাল ষাঁড় ‘বাদশা’। সাদা-কালোর মিশ্রণে সুঠাম স্বাস্থ্যের বাদশার ওজন প্রায় ৩০ মণ। এই ষাঁড়টি বিক্রির জন্য দাম হাঁকা হয়েছে ১২ লাখ টাকা।

অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টি দেশীয় পদ্ধতিতে নিজের বাড়িতে লালন পালন করেছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান ও তার স্ত্রী আশেদা বিবি। লুৎফর পেশায় একজন কৃষক। তার স্ত্রী আশেদা বিবি গৃহিণী। 

তারা সাড়ে তিন বছর ধরে লালন-পালন করে ষাঁড়টি এমন সুঠাম বানিয়েছেন। বিশাল আকৃতির ষাঁড়টি দেখার জন্য তাদের বাড়িতে ভিড় করছেন দূর-দূরান্তের মানুষ।

ষাঁড়টি আনুমানিক লম্বায় ১০ ফুট, উচ্চতায় ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, প্রস্ত ৮ ফুট। প্রায় ১২০০ কেজি ওজনের গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে কয়েকজন ষাঁড়টির দরদাম করেছেন। ন্যায্যমূল্যে পেলে ষাঁড়টি বিক্রি করে দেবেন বলে জানান গরুটির মালিক লুৎফর রহমান।

তিনি বলেন, বাদশাকে হাটে নেওয়া অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই বিভিন্নভাবে ষাঁড়টির ছবি ও বর্ণনা অনলাইনে দিয়ে বিক্রি করার চেষ্টা করছেন।

লুৎফর রহমান বলেন, বাড়িতে দেশী গরুর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভির জন্ম হয়। সেই গাভি লালন পালন করে একই জাতের ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বাছুর জন্ম দেয় গাভিটি। তিন বছর আগে দেড় লাখ টাকায় গাভিটি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে ষাঁড়টি লালন-পালনের খরচ চালাচ্ছেন।

বাদশার খাদ্য তালিকায় আছে কাঁচা ঘাস, খড়, গমের ভূসি, চালের কুঁড়া, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, খইল, ছোলা ও খুদের ভাত। সব মিলে দিনে ১৫ থেকে ২০ কেজি করে খাবার খায় বাদশা। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও দিনে দিনে তার খাবারের চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যায়।

জন্মের পর থেকেই ষাঁড়টি দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করছেন বলে জানান আশেদা বিবি। তিনি বলেন, সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে একটি গাভি কিনেছিলাম। সেই গাভি থেকে ষাঁড়টির মা হয়েছে। ষাঁড়টিকে পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে লালন-পালন করেছি। পরিবারের সবাই মিলে যত্ন করে বাদশাকে বড় করা হয়েছে। তার পেছনে সাড়ে তিন বছরে অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। ঈদের আগে এখন ভালো দামে বিক্রি করতে চান। 

বাগমারা উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আহসান হাবিব বলেন, আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত উপজেলায় ১০ থেকে ১৫ মণ ওজনের কিছু বিশাল আকৃতির ষাঁড় আছে। এছাড়া শুনেছি বাদশার ওজন ২৫ মণের উপরে। সেটিই উপজেলায় সব থেকে বিশাল আকৃতির ষাঁড়।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে চাহিদার তুলনায় কোরবানিযোগ্য পশু বেশি রয়েছে। এ বছর রাজশাহীতে কোরবানির উপযোগী পশু রয়েছে ৪ লাখ। তবে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

এএইচ