ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলন ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা (ভিডিও)

মানিক শিকদার

প্রকাশিত : ০১:০০ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০২৩ রবিবার

ন্যুনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছে পোশাক শ্রমিকরা। ঘটছে কারখানা ভাংচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধের ঘটনা। এদিকে, এ আন্দোলন রাজনৈতিক স্বার্থে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে মালিক পক্ষ। তবে শ্রমিকরা বলছেন, রাজনৈতিক সহিংসতার সাথে তাদের আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। 

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন। কর্মবিরতির পাশাপাশি চলছে সড়ক অবরোধ, কারখানা জ্বালাওপোড়াও ও ভাংচুর। আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

পোশাক কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে গাজীপুরের কোনাবাড়ি, সফিপুর চন্দ্রা ও আশুলিয়া এলাকায় ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। 

পোশাক শ্রমিকদের এই আন্দোলনে নানা রকম উস্কানী দেয়া হচ্ছে রাজনৈতিক মহল থেকে, এমন অভিযোগ খোদ শ্রমিকদের।

তারা জানান, কাজের উদ্দেশে আসি, ঘণ্টাখানেক কাজ করার পর দেখি কোত্থেকে কিছু বহিরাগত এসে গেটে লাঠিসোটা দিয়ে পিটাপিটি করছে, গ্লাস ভেঙে দিচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ন্যায্য মজুরি নির্ধারণের জন্য ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে মজুরী বোর্ড। কিন্তু নির্বাচন সামনে রেখে শ্রমিকদের আন্দোলন ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা চলছে।

বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “শ্রমিক নামে যারা আন্দোলনে নেমেছে, চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলবো এরা শ্রমিক না। কারণ ওই কারখানার শ্রমিক তো ফ্যাক্টরির ভেতরে। বা ওই অঞ্চলের কোনো শ্রমিক কিন্তু নামেনি। আন্দোলনটাকে রাজনীতিকি করণের জন্য, ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এটা অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।”

শ্রমিকদের মাঝে গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে জানান এই শ্রমিক নেতা। 

শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, “যারা এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও দুঃখজনক ঘটনা। এরই মধ্যে আমার শ্রমিক ভাইবোনের রক্ত ঝড়েছে।”

অধিকার ও মজুরীর টাকা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও গার্মেন্টস শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান মালিক ও শ্রমিক নেতাদের।

বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি বলেন, “শ্রমিকদের বর্তমান বেতনকাঠামো নির্ধারণ করার বিষয়টা চলমান একটি প্রক্রিয়া। ২০১০ ও ১৩-তে হয়েছে, এরপর ২০১৮ সালে হয়েছে। আমি মনে করি, এটা নির্বাচনের আগে কোনো অবস্থায়ই করার সুযোগ রাখা উচিত। কারণ এই সময়ে পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হয়।”

শ্রমিক নেতা বলেন, “শ্রমিক আন্দোলনে কখনই নৈরাজ্য করার সুযোগ নেই, জ্বালাও-পোড়াওয়ের সুযোগ নেই। শ্রমিক আন্দোলন হচ্ছে যৌথ দরকষাকষি। সেখানে টেবিলে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
 
নভেম্বর মাসের মধ্যে বোর্ড থেকে ন্যায্য মজুরী আসবে বলে আশা করেন শ্রমিকরা। দ্রব্যমূল্য ও শিল্পাঞ্চলে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণেরও দাবি জানান তারা।

এএইচ