ঢাকা, শনিবার   ১১ মে ২০২৪,   বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

অভাব দূর করবেন কিভাবে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৪৫ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ মঙ্গলবার

জীবনে ধনসম্পদের প্রাচুর্য ও হালাল সম্পদ আল্লাহর তাআলার বিশেষ নেয়ামত। কিন্তু কখনো কখনো তিনি আমাদেরকে এগুলো না দিয়ে পরীক্ষায় ফেলেন, কিন্তু দুর্বল ঈমানদার হওয়ার কারণে অনেকে ধৈর্যহারা হয়ে পড়েন।

মহানবী রাসূল সা. এমন পরিস্থিতিতে এই দোয়াটি পড়ার প্রতি উদ্ধুদ্ধ করেছেন। এই দোয়ার বরকতে মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের অভাব-অনটন দূর করে দেবেন।

অভাব দূর হওয়ার দোয়া- 
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল ফাকরি, ওয়াল কিল্লাতি, ওয়াজজিল্লাতি, ওয়া আউজুবিকা মিন আন আজলিমা আও উজলিমা।” (আবু দাউদ, হাদিস - ১৫৪৪)।

বাংলা অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই দরিদ্রতা থেকে। এবং আপনার কম দয়া থেকে ও অসম্মানী (জিললতি) থেকে। এবং আমি আপনার কাছে আরও আশ্রয় চাচ্ছি কাউকে জুলুম করা থেকে অথবা কারো দ্বারা অত্যাচারিত হওয়া থেকে।’

ধর্মের শিক্ষা হচ্ছে দাতা হওয়ার শিক্ষা

আল্লাহর রসুল বলেছেন যে, দান করো দান করো, খেজুরের এক চতুর্থাংশ হলেও। একটা খেজুরের চারভাগের একভাগ হলে দান করো। অর্থাৎ কোনো দানই ক্ষুদ্র নয়।

ধর্মের শিক্ষা হচ্ছে মানুষকে দাতা হওয়ার শিক্ষা দেয়া, যে তুমি দান করো তাহলে কী হবে, তোমার মঙ্গল হবে কল্যাণ হবে। তুমি যখন দরিদ্রকে দান করছ, এই দানটা দরিদ্র পাচ্ছে না। এই দানটা দরিদ্রের যে স্রষ্টা, তিনি পাচ্ছেন। এটা তিনি হিসেব করছেন যে, এ দিয়েছে।

একজন অসুস্থ মানুষের সেবা করা মানে আল্লাহকে সেবা করা
হাশরের ময়দানে আল্লাহতায়ালা কী বলবেন? যে আমি অভুক্ত ছিলাম তুমি আমাকে খাবার দাওনি। তখন বান্দা বলবে যে, হে আল্লাহ তুমি তো কি? তুমি রিজিক দাতা তুমি অভুক্ত থাক কীভাবে? যে অমুক বান্দা অমুক মানুষটি অভুক্ত ছিল কিন্তু তুমি তাকে খাবার দাওনি।

তার মানে কী? একজন অভুক্ত মানুষকে খাওয়ানো আল্লাহকে খাওয়ানো। এবং একজন অসুস্থ মানুষের সেবা করা আল্লাহকে সেবা করা। 

বৃদ্ধ, কেউ নাই। উঠতে পারে না তাকে ধরে গোসল করাচ্ছে কাপড়চোপড় পরিষ্কার করিয়ে দিচ্ছে। খাবার নিয়ে খাবার দিচ্ছে। খাবার খাওয়াচ্ছে। তো সে কী করছে? সে তো আসলে স্রষ্টার সৃষ্টির সেবা করা মানে হচ্ছে স্রষ্টাকে সেবা করা।

দোয়া বলা লাগে না, অন্তর থেকে দোয়া আসে
এবং এদের যে মানে ধরুন, মহিলা বৃদ্ধা, বাড়ির কেউ দেখছে না। তাকে যদি আপনি মমতা দিয়ে গোসল করিয়ে দিচ্ছে কাপড় পরিয়ে দিচ্ছে কাপড় চেঞ্জ করে দিচ্ছে চুল ধুইয়ে চুল শুকিয়ে আবার আঁচড়ে দিচ্ছে। সে মহিলার যে হাসি, সে মহিলার যে হাসি, এটা যদি আপনারা দেখেন! মানে-কারণ-ধরুন একজন মহিলা, দুদিন তিনদিন গোসল না করে গ্রামে গরমের মধ্যে তার শরীরের কী অবস্থা দাঁড়ায়।

তখন যদি তাকে গোসল করিয়ে দেয়া হয়, মাথায় একটু তেল দিয়ে দেয়া হয়, চুলটা আঁচড়ে দেয়া হয়। কেউ প্রকাশ করতে পারবে না তো এই আনন্দটা কোন মাপের কোন মাত্রার হতে পারে তার!

দানটা গ্রহীতার কাছে যাওয়ার আগে আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়
এবং যে কারণে দেখবেন যে আমাদের ওপরে ঝামেলা বিপদ তুফানের মতো আসছে। কিন্তু সব চলে গেছে বুদবুদের মতো। কেন? আল্লাহ আমাদেরকে সবসময় রহমতের ছায়ায় রেখেছেন। সঙ্ঘে যখন আপনি দান করছেন, সঙ্ঘে এই দানটা গ্রহীতার কাছে যাওয়ার আগে আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায়। আর সবকিছুর মালিক তো আল্লাহ। আপনার সমস্যা সমাধান কি কোনো মানুষ করতে পারবে? আপনার সমস্যা সমাধান আল্লাহ করবেন।

সবসময় নিয়ত থাকবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে
যখন আপনি দান করছেন নিয়ত করে যখন মাটির ব্যাংকে টাকা রাখছেন, যে আল্লাহ, তুমি মানে আমার এই ঝামেলাটা ইয়ে দাও, আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্যে আমি এই টাকাটা দিলাম। তোমার সন্তুষ্টির জন্যে।

সবসময় নিয়ত থাকবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে-এবং এতে মানুষের উপকার হবে, তোমার বান্দার উপকার হবে। কারণ যারা এই টাকা নিয়ে কাজ করছে আমি জানি যে তারা আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে, আমার পুরো আস্থা রয়েছে। অতএব তুমি কী করো? তুমি বলেছ যে দাতার কোনো অমঙ্গল হয় না, দাতার কেউ অমঙ্গল কেউ করতে পারবে না। তুমি আমার মঙ্গল করো, আমার এই ঝামেলা দূর করে দাও।

সঙ্ঘবদ্ধ দান অমঙ্গলের ৭০০ দরজা বন্ধ করে দিতে পারে
কারণ আপনি তো দিয়ে দিলেন, আল্লাহর কাছে পৌঁছে গেল। এবং দান সবসময় অমঙ্গলের ৭০টা দরজা বন্ধ করে দেয়। আর সঙ্ঘবদ্ধ দান তো ৭০টা না আমার মনে হয় ৭০০ দরজা বন্ধ করে দেয়। কারণ সঙ্ঘ- সঙ্ঘের ওপরে সবসময় আল্লাহর রহমত থাকে। টাকা দিয়ে ভবন তৈরি করা যায়, কিন্তু ভালো কাজ করার জন্যে মানুষ দরকার কারণ সঙ্ঘবদ্ধ না হলে ভালো কাজগুলো করা কঠিন। 

ভালো মানুষ গড়ার প্রক্রিয়াই হচ্ছে, আই ক্যান থিংক
আমি বলি যে, না, আমার কোনো টাওয়ারের প্রয়োজন নাই। আমাদের মানুষ দরকার, ভালো মানুষ। এবং ভালো মানুষ গড়ার প্রক্রিয়াই হচ্ছে, যে আই ক্যান থিংক। যে বলতে পারবে, আই ক্যান থিংক আই ক্যান ওয়েট আই ক্যান ফাস্ট আই ক্যান লাভ আই ক্যান সার্ভ। এটা হচ্ছে ভালো মানুষের সজ্ঞা।

হাউ টু? আসেন কোয়ান্টামে প্রসেসের মধ্যে আপনি ঢুকে যাবেন, আপনিও ভালো মানুষ হয়ে যাবেন যদি আপনি ফলো করেন। আর তা না হলে ভালো ভালো কথা শুনবেন কিন্তু ভালো মানুষ হবেন না এবং ভালো ভালো কথা বলবেন ভালো মানুষ হবেন না। কিন্তু প্রসেসটাকে ফলো করতে হবে।

সবাই ভালো মানুষ হবে না, কিন্তু কিছু ভালো মানুষ যথেষ্ট
এবং আমরা দেখলাম যে ঠিক আছে, আমাদের ওখানে কিন্তু কোথায়- লামাতে কোনো বিল্ডিং নাই। সব টিনের ঘর। কিন্তু কি, তার ছাত্ররা এখন কী করছে?

যারা হয়তো জুম চাষের বাইরে কোনোদিন কিছু করতে পারত না। তারা এখন বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়তে যাচ্ছে। ফুল স্কলারশিপ নিয়ে । তো কেন? যে মনুষ তৈরি করার চেষ্টা করেছি।

আপনারা বলবেন যে সবাই কি ‘মানুষ’ হয়ে গেছে? আরে আমাদের পরিবারে যারা, একই পরিবারের সবাই কি মানুষ হয়? সব ছেলেমেয়ে কি মানুষ হয়, বলেন? না। কিছু মানুষ হবে, কিছু অমানুষ থেকে যাবে।

অতএব এটা হচ্ছে প্রকৃতির নিয়ম যে, সব ভালো মানুষ হবে না, কিন্তু কিছু ভালো মানুষ যথেষ্ট।

আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নাই, অভাব হচ্ছে ভালো মানুষের
ধরুন আমাদের আমাদের সমাজেও এখন যদি টেন পার্সেন্ট মানুষ ভালো হয়ে যায়, বাকি ৯০% এমনি লাইনে চলে আসবে। টেন পার্সেন্ট মানুষ যদি ভালো হয় এবং তারা যদি সঙ্ঘবদ্ধ হয় বাকি সব এমনি লাইনে চলে আসবে।

আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নাই, তো অভাব হচ্ছে ভালো মানুষের
বাংলাদেশে অতি ধনীর সংখ্যা দ্রুত-সবচেয়ে বর্ধমান অতি ধনীর দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।

তো আমাদের অভাব কোথায়? অভাব হচ্ছে ভালো মানুষের। যিনি সম্পদটা সুন্দরভাবে সুষম বণ্টনের অভাব, আর কিছু না। এই কথাই আমরা সবসময় বলে আসছি যে আমাদের কোনো অভাব নাই, জনসংখ্যার কোনো অভাব নাই, জনশক্তির অভাব নাই। আমাদের অভাব হচ্ছে ভালো মানুষের।

সূত্র-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে নেয়া। 
কেআই//