ঢাকা, সোমবার   ১৩ মে ২০২৪,   বৈশাখ ৩০ ১৪৩১

বিচ্ছেদ সইতে না পেরে স্ত্রী, কন্যা ও শাশুড়ীকে হত্যার চেষ্টা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৩৬ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শনিবার

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার অর্জুনতলা ইউনিয়নে বিবাহ বিচ্ছেদ সহ্য করতে না পেরে শাশুড়ি মাফিয়া বেগম (৫৮), স্ত্রী বিবি ফাতেমা (৩৮) ও মেয়ে রাবেয়া খাতুনকে (১৮) ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর দ্রুত পালিয়ে যায় আমির হোসেন (৪৮) নামের অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি।

শুক্রবার ভোরে অর্জুনতলা গ্রামের ইদিলপুর গ্রামের ফাতেমার নতুন বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

আহতরা হচ্ছেন ওই বাড়ির লোকমান হোসেনের স্ত্রী মাফিয়া বেগম, মাফিয়ার মেয়ে বিবি ফাতেমা ও নাতনি রাবেয়া খাতুন। আহতদের মধ্যে মরাত্মক জখম ও আশংকাজনক হওয়ায় মাফিয়া ও ফাতেমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২৭-২৮ বছর আগে পারিবারিকভাবে ফাতেমার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামের সফি উল্যার ছেলে আমিরের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে গত তিন বছর আগে ফাতেমা ও আমিরের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিচ্ছেদের সময় তিন সন্তান ফাতেমার সাথে চলে আসে এবং আমির হোসেন তাদের সবাইকে দেখে নিবে বলে হুমকি দেয়। 

পরে ফাতেমা বাবার এলাকায় এসে একটি ঘর করে সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। কয়েকদিন আগে ছেলে জাহাঙ্গীর বিদেশে যায়, আরেক ছেলে ঢাকায় চাকরি করে, আর মেয়ে এবং নিজের মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন ফাতেমা।

আহত রাবেয়া খাতুন বলেন, ভোরে ফজর নামাজের সময় তার বাবা (আমির হোসেন) এসে ঘরের দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করতে থাকে। এসময় ঘর থেকে আমরা কেউ কোনো সাড়া শব্দ করিনি। এর কিছুক্ষণ পর কোনো ডাকাডাকি না থাকায় আমরা ভাবছিলাম তিনি চলে গেছেন। এরই মধ্যে ঘরের পাশে থাকা হাঁস মুরগির ছেড়ে দিলে সেগুলো শব্দ করতে থাকা। তাতে আমার মা (ফাতেমা) ভেবেছিলেন শিয়াল বা কোনো চোর হাঁস-মুরগি নিয়ে যাচ্ছে। 

এটা ভেবে তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে তাকে ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করেন আমির হোসেন। একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করতে করতে পার্শ্ববর্তী বাড়ির দিকে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে ধান খেতের ভেতরে গিয়েও তাকে কুপিয়ে জখম করেন। 

পরে ঘরের ভেতর এসে আমাকে এবং আমার নানীকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। একপর্যায়ে আমাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তিনি দ্রুত পালিয়ে যান। পরে লোকজন আমাকে উদ্ধার করে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং আমার মা এবং নানিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

তাদের দুইজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাদের ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে।  

সেনবাগ থানার পুলিশ-পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।

এএইচ