ঢাকা, সোমবার   ২০ মে ২০২৪,   জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

মৃতের সন্তান হিসেবে করণীয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:১২ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার | আপডেট: ০৪:১৭ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ শনিবার

মা-বাবা ছোট শব্দ, কিন্তু এ দুটি শব্দের সাথে কত যে আদর, স্নেহ, ভালবাসা রয়েছে  তা পৃথিবীর কোন মাপযন্ত্র দিয়ে নির্ণয় করা যাবে না। মা-বাবা কত না কষ্ট করেছেন, না খেয়ে থেকেছেন, অনেক সময় ভাল পোষাকও পরিধান করতে পারেন নি, কত না সময় বসে থাকতেন সন্তানের অপেক্ষায়।

সেই মা বাবা যাদের চলে গিয়েছেন, তারাই বুঝেন মা বাবা কত বড় সম্পদ। যেদিন থেকে মা বাবা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন সেদিন থেকে মনে হয় কী যেন হারিয়ে গেল,তখন বুক কেঁপে উঠে, চোখ থেকে বৃষ্টির মত পানি ঝরে, কী শান্তনাই বা তাদেরকে দেয়া যায়!  সেই মা বাবা যাদের চলে গিয়েছে তারা কি মা-বাবার জন্য কিছুই করবে না?। এত কষ্ট করে আমাদের কে যে মা-বাবা লালন পালন করেছেন তাদের জন্য আমাদের কি কিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে। 

আলোচ্য প্রবন্ধে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মৃত মা-বাবা জন্য কী ধরনের আমল করা যাবে এবং যে আমলের সওয়াব তাদের নিকট পৌঁছাবে তা উল্লেখ করা হলো...

> মা-বাবা কারো সাথে কোনো ভালো কাজের ওয়াদা করে গেলে বা এমন ওয়াদা, যা তারা বেঁচে থাকলে পালন করে যেতেন, সন্তান হিসেবে তা যথাসম্ভব বাস্তবায়নের চেষ্টা করুন।

> শুধু ঈদ বা জুমাবার বা বছরের যে-কোনো দিনকে নির্দিষ্ট করে নয়, সময়-সুযোগ করে কবর জিয়ারত করুন। জিয়ারত করার সময় বলুন− ‘হে কবরবাসীগণ, আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। নিশ্চয়ই আমরা আপনাদের সাথে মিলিত হবো। আমরা আল্লাহর কাছে আপনাদের এবং আমাদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।’

> তাদের কোনো মানত (সদকা করা, রোজা রাখা ইত্যাদি) থাকলে সেটাও পূরণ করুন।

> মরহুম মা-বাবার বন্ধুবান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীদের খোঁজখবর রাখুন।

> মৃতের মাগফেরাত কামনা করে আল কোরআন বাংলা মর্মবাণী বিতরণ করুন।

> মা-বাবার উদ্দেশ্যে সদকায়ে জারিয়াস্বরূপ চলমান জনকল্যাণমূলক কাজ করুন। যেমন : সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা করা/ টিউবওয়েল স্থাপন করা/ কূপ খনন করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা, এতিমের দায়িত্ব নেয়া, গাছ লাগানো, জমি/ ফসলের বাগান ওয়াক্‌ফ করে দেয়া ইত্যাদি। এসবের মাধ্যমে যতদিন যত মানুষ উপকৃত হতে থাকবে ততদিন মৃত ব্যক্তির আমলনামায় নেকি বা পুণ্য লেখা হতে থাকবে।

> মা-বাবা যে ভালো কাজগুলো শুরু করে দিয়ে গেছেন সেগুলো অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা করুন।

> মৃতের রেখে যাওয়া অর্থসম্পদ আইন অনুযায়ী প্রকৃত উত্তরাধিকারীরা সঠিকভাবে পেল কিনা তা নিশ্চিত করুন। অন্যদের দুর্বলতার সুযোগে অথবা কৌশলে নিজে বেশি নেয়ার কূটবুদ্ধি আঁটবেন না। তাহলে ইহকাল ও পরকালে আপনি বিপদগ্রস্ত হবেন।

> লোক ভাড়া করে, দিন-তারিখ ঘোষণা দিয়ে অনুষ্ঠান করে বা খাবার খাওয়ানোর বিনিময়ে নয়; মা-বাবার জন্যে নিজে দোয়া করুন, সবার কাছেও নিঃস্বার্থ দোয়া চান। প্রভুর কাছে গভীর আকুতি নিয়ে বলুন−‘হে আমার প্রতিপালক! আমার মা-বাবা শৈশবে যে মমতায় আমাকে লালন করেছেন, তুমিও তাদের ওপর সে-রূপ করুণাবর্ষণ করো। হে আমার প্রতিপালক! কর্মফল দিবসে আমাকে, আমার মা-বাবাকে এবং সকল বিশ্বাসীকে তুমি ক্ষমা করে দিও।’

এমএম//