কাতারে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে কূটনীতিকদের অভ্যর্থনা
কাতার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:০৫ এএম, ১১ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কাতারে এক জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা ও নৈশভোজের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
দোহা শেরাটন হোটেলের সালোয়া হলে বুধবার (৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাত ৮টায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো: নজরুল ইসলাম, মিনিস্টার ও ডেপুটি চিফ অফ মিশন মো: ওয়ালিউর রহমান, সামরিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম খায়ের উদ্দিন, কাউন্সিলর মোবাশ্বেরা কাদেরী, শ্রম কাউন্সিলর মোহাম্মদ মাশহুদুল কবীর, কাউন্সিলর ভিসা ও পাসপোর্ট মো: মাহাদি হাসান, শ্রম কাউন্সিলর তন্ময় ইসলাম, প্রথম সচিব আব্দুল্লাহ আল রাজী, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো: নাছির উদ্দীন আমন্ত্রিত অতিথিদের অভ্যর্থনা জানান।
একশোটির বেশি দেশের বিভিন্ন মিশনের রাষ্ট্রদূত ও কাউন্সিলররা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাতারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী গানেম বিন শাহীন বিন গানিম আল গানিম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর অব প্রটোকল রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম ইউসুফ আবদুল্লাহ ফখরু এবং কূটনৈতিক কোরের ডিন এবং ইরিত্রিয়ার রাষ্ট্রদূত আলী ইব্রাহিম আহমেদ।
বাংলাদেশ ও কাতারের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এরপর রাষ্ট্রদূত মো: নজরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য সবার সামনে তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার অভিমত ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত মো: নজরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের জন্য তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে শক্তিশালী সমর্থন যুগিয়েছিলেন।
তিনি উন্নয়ন, স্ট্রনীতি, ক্রীড়া, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কাতারের সাফল্যের প্রশংসা করেন। কাতার ইতোমধ্যে ক্রীড়া কেন্দ্র হিসেবে পরিনত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফিফা বিশ্বকাপ-২০২২ সফলতার সহিত আয়োজনে কাতারের প্রশংসা করেন। অতঃপর কাতারে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সহায়তার জন্য রাষ্ট্রদূত কাতারের মহামহিম আমির এবং কাতার সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, কাতারের সাথে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা, জ্বালানী ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক এবং সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে নতুন করে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর আসন্ন কাতার সফরের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে পরবর্তী জ্বরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন। তিনি ছাত্র/জনতার নেতৃত্বাধীন জুলাই-আগষ্ট গণ-অভ্যুত্থান এর প্রাসঙ্গিকতা আলোচনা কালে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে ও একটি বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বাধীন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
এরপর কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো: নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠানের অতিথিদেরকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন।
পরে রাষ্ট্রদূত অতিথিদের সাথে কৌশল বিনিময় করেন এবং নৈশভোজে আমন্ত্রন জানান।
অনুষ্ঠানে কাতারস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী সংগঠন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্য সামগ্রীর দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করা হয়। পরিশেষে নৈশভোজে অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী দেশীয় বিভিন্ন খাবার পরিবেশন করা হয়।
প্রতিবছর ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে অভ্যর্থনা ও নৈশভোজের আয়োজন করে দোহা বাংলাদেশ দূতাবাস। তবে এইবার পবিত্র মাহে রমজানের কারণে ২৬ মার্চের পরিবর্তে (৯ এপ্রিল) দিবস টির অনুষ্ঠান আয়োজন করে দূতাবাস।
এমবি//