ঢাকা, শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১২ ১৪৩২

বাণিজ্যযুদ্ধে উত্তেজনা চরমে, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে চীনের ১২৫% শুল্ক আরোপ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:০৭ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:১৯ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার

চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কের কড়া জবাব দিলো বেইজিং। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে চীন।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ একতরফাভাবে অতিমাত্রায় উচ্চ শুল্ক আরোপ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিধি ও অর্থনৈতিক নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। এটি মূলত চীনের ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের একটি কৌশল।”

সিএনবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণার পরই চীন এই পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এতে করে দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তির মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই উত্তেজনার ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল (গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন) বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

তবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও সমঝোতার পথ এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “বেইজিং এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমমর্যাদার ভিত্তিতে আলোচনায় বসতে আগ্রহী।”

এদিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নতুন করে একটি অভিযোগও দায়ের করেছে চীন।

তবে হোয়াইট হাউস চীনের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিকে বাদ রেখে অন্যান্য দেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও, চীনের ক্ষেত্রে সেই ছাড় দেওয়া হয়নি।

গত সপ্তাহজুড়েই পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ এবং মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে চীন। এতে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির আশাও ক্রমেই ম্লান হয়ে আসছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “চীন আলোচনায় আসতে চায় না, এটা দুঃখজনক। তারা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় অপরাধী।”

তিনি আরও দাবি করেন, “চীনের অর্থনীতি অসম ও ভারসাম্যহীন। এই বাণিজ্য সংঘাত চীনকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি চীনের জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশ হলেও, এতে প্রায় দুই কোটি শ্রমিক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তাই দীর্ঘমেয়াদে এই যুদ্ধ চীনের শ্রমবাজারকেও চাপে ফেলতে পারে।

চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনের স্বার্থে হস্তক্ষেপ অব্যাহত রাখে, তবে বেইজিং শেষ পর্যন্ত লড়বে এবং প্রয়োজনীয় সব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি।

এসএস//