খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক নিয়ে যা জানা গেল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:০১ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৫:৪৫ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ বৃহস্পতিবার

সাম্প্রতিক ইউরোপ সফরে গিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সফরের অংশ হিসেবে বেলজিয়াম থেকে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসভবনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় জামায়াত আমিরের। এই নিয়ে নানা আলোচনা এখন দেশের রাজনীতিতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনীতি, আগামী নির্বাচন, গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার ও বাংলাদেশের ভবিষ্যত রাজনীতির গতি পথ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
এদিকে বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান জানান, “আমাদের সফরের মূল উদ্দেশ্যই ছিল বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করা। আলহামদুলিল্লাহ, তিনি আমাদের আন্তরিকতা ও সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন।”
তবে আলোচিত এ সাক্ষাতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সমঝোতা হয়নি বলে জানিয়েছেন জামায়াত আমির। তার ভাষায়, “এক জায়গায় দুই দলের শীর্ষ নেতারা বসলে রাজনীতি প্রসঙ্গ আসবেই, সেটা স্বাভাবিক। তবে আমরা কেবল সাধারণ আলোচনা করেছি—নির্বাচন কবে, কীভাবে হবে, বিচারব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত—এসব নিয়ে কথা হয়েছে, কোনো সিদ্ধান্তমূলক আলোচনা হয়নি।”
বৈঠকের বাইরেও জামায়াত আমির আরও বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শাসনের সময় সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে জামায়াত। আমাদের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। ব্রিটেনের একটি এপেক্স কোর্ট একে ‘Genocide of the Justice’ বলে অভিহিত করেছে।”
তিনি আরও জানান, জামায়াতের মতো বিএনপিও একইভাবে দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে। “আমরা ১১ জন শীর্ষ নেতা হারিয়েছি, অসংখ্য কর্মী নিহত ও পঙ্গু হয়েছেন। বিএনপিও অনেক নেতাকর্মী হারিয়েছে,”—বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, “রাজনৈতিক বিরোধ থাকতেই পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নির্বাচন দেখিয়েছে, নির্বাচন শেষে সবাই মিলে দেশ চালানো যায়। আমাদেরও সেই দিকেই এগোতে হবে।”
উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপির দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বন্ধুত্ব রয়েছে। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশে রাজনীতি শুরুর পর থেকেই জামায়াত-বিএনপির সখ্যতা। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছিল বিএনপি। পরবর্তীতে ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে এই দুই দল জোটবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করে। পরবর্তীতে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি-জামায়তের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসে। সরকারের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীত্বও পান জামায়াত। এরপর দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তারা জোট বদ্ধ ও যুগৎপথ আন্দোলন করেন।