ঢাকা, শুক্রবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ১২ ১৪৩২

ইন্টারনেটের দাম কমানোর ঘোষণা সামিটের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৪ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২৫ মঙ্গলবার

বেসরকারি ডেটা এবং ট্রান্সমিশন পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সামিট কমিউনিকেশনস সাশ্রয়ী মূল্যে এবং মানসম্পন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানে সরকারের পদক্ষেপের সাথে সঙ্গতি রেখে ইন্টারনেটের দাম এবং ট্রান্সমিশন চার্জ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।

মঙ্গলবার এ তথ্য জানান সামিট কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ আল ইসলাম।

তিনি বলেন, “আমরা ইন্টারনেটের দাম ১০ শতাংশ এবং এনটিটিএন চার্জ ১৫-২০ শতাংশ কমিয়েছি।”

আরিফ আল ইসলাম বলেন, “সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের ইন্টারনেট সরবরাহে সহায়তা করার জন্য সামিট কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা কমিটি এই মূল্য হ্রাস ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত।”

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তাইয়েবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরিফ আল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে সরকারী উদ্যোগগুলোকে সামিট কমিউনিকেশনস ধারাবাহিকভাবে সমর্থন করে আসছে।

সামিট কমিউনিকেশনস আরেকটি সহযোগী কোম্পানি ফাইবারএটহোম এই প্রয়াসে ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) চার্জ ১০ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইাইজি) চার্জ ১০ শতাংশ এবং ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) চার্জ ১৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।

এর আগে, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ ৫০০ টাকায় একই হারে ইন্টারনেটের গতি ৫ এমবিপিএস থেকে ১০ এমবিপিএস করার ঘোষণা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট অফার করার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। সরকারের এই উদ্যোগের সমর্থনে এবং আইএসপিগুলিকে সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের ইন্টারনেট সরবরাহে সহায়তা করার জন্য, সামিট কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা এই হ্রাস ঘোষণা করেছে।” 

তিনি বলেন, সামিট তাদের নেটওয়ার্কের বেশিরভাগ পরিষেবা পয়েন্টে ৯৯.৯৫ শতাংশেরও বেশি পরিষেবা আপটাইম বজায় রেখেছে। “ইন্টারনেটের মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা প্রতিটি সরকারি উদ্যোগকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করতে প্রস্তুত।” 

এর আগে, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) আন্তর্জাতিক গেটওয়ের দাম কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বিএসসিসিএল আইআইজি এবং আইএসপি-র জন্য চার্জ ১০ শতাংশ কমিয়েছে, যার ফলে পাইকারি ক্লায়েন্টরা মোট ২০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছেন।

ফয়েজ আহমেদ তাইয়্যেব সোমবার তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে ফাইবারএটহাম কর্তৃক তিনটি স্তরে ইন্টারনেটের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি আরও লিখেছেন যে, এখন কেবল তিনটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরের ইন্টারনেটের দাম কমানোর ঘোষণা করা বাকি। "বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের মান নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে। মানের তুলনায় দাম উলে¬খযোগ্যভাবে বেশি। এই পরিস্থিতিতে, সরকার গ্রাহকদের স্বার্থে যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।" 

ফয়েজ আহমেদ তাইয়্যেব আরও বলেন, এই সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লিঙ্ক থেকে স্থানীয় অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক পর্যন্ত দেশের ইন্টারনেট লাইসেন্সিং ব্যবস্থার প্রায় সকল পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য হ্রাস করা হয়েছে। "শুধুমাত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র সমাধান করা বাকি আছে সেটি হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট।"

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী উল্লেখ করেছেন যে, যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিটক ঈদ-উল-ফিতরের পর থেকে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবায় ১০ শতাংশ ছাড় কার্যকর করেছে, তবুও দেশের তিনটি বেসরকারি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর এখনও এই পদক্ষেপ অনুসরণ করেনি বা কোনও সম্পর্কিত ঘোষণা দেয়নি।

তা সত্ত্বেও, সরকার মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতকে সহায়তা করার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

ফয়েজ আহমেদ তাইয়েব বলেন, “আমরা মোবাইল অপারেটরদের ডিডাব্লিউডিএম এবং ডার্ক ফাইবার অবকাঠামোতে অ্যাক্সেস প্রদান করেছি যা উলে¬খযোগ্যভাবে পরিচালন ব্যয় হ্রাস করে। এই ধরনের সহায়তা এবং আপস্ট্রিম মূল্য হ্রাস ইতিমধ্যেই কার্যকর থাকায়, মোবাইল অপারেটরদের তাদের দাম কমাতে বিলম্ব করার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।” 

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বেসরকারি অপারেটররা শীঘ্রই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের সাথে নিজেদের সামঞ্জস্য করবে।

এএইচ