যেকোন সময় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে পাকিস্তান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৫০ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ বৃহস্পতিবার

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে তীব্র কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে যেকোনো সময় ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। দেশটির নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করাচির উপকূলে পাকিস্তানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) পর্যন্ত একাধিক 'সারফেস টু সারফেস' মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালানো হবে। এই ঘোষণাটি এসেছে এমন এক সময়ে, যখন কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারতের মন্ত্রিসভায় জরুরি বৈঠক চলছিল। খবর ‘দ্য হিন্দু’র।
পেহেলগামের হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরোক্ষ জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে ভারত। জবাবে নয়াদিল্লি একাধিক কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে—এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদ চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য বিশেষ ভিসা সুবিধা বাতিল, ইসলামাবাদে নিযুক্ত পাক সামরিক উপদেষ্টাদের ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা এবং প্রধান সীমান্ত পারাপার পথ বন্ধ করে দেওয়া।
ভারতের পাল্টা সিদ্ধান্তের জবাবে পাকিস্তানও কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ইসলামাবাদ ঘোষণা দিয়েছে, তারা সিমলা চুক্তি বাতিল করছে এবং ওয়াঘা সীমান্তও বন্ধ করে দিচ্ছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের আকাশসীমায় ভারতীয় মালিকানাধীন বা ভারত পরিচালিত কোনো বিমান প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানানো হয়। শুধু তাই নয়, ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধের পাশাপাশি পাকিস্তান হয়ে অন্য কোনো দেশের পণ্য ভারতে প্রবেশ বা ভারত থেকে বের হওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এর আগে ভারতের পক্ষ থেকেও একটি প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিরক্ষা প্রদর্শন করা হয়। ভারতীয় নৌবাহিনী আরব সাগরে রণতরী আইএনএস সুরতের মাধ্যমে একটি মাঝারি-পাল্লার ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (MR-SAM) সফলভাবে পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি শত্রুপক্ষের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হয়। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, এটি ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার এক অনন্য নিদর্শন।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এসব কূটনৈতিক উত্তেজনাকে হালকা করে দেখা হচ্ছে। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “ভারতের ঘোষণাগুলো শিশুসুলভ এবং এতে গুরুত্বের অভাব রয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি জানান, পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (NSC) এই পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে এবং সেখানে ভারতকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
এসএস//