‘সিআইএ উপপ্রধানের ছেলের রুশ সেনায় যোগ, ইউক্রেনে মৃত্যু’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩০ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ শনিবার

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর (CIA) উপপরিচালকের ছেলে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিহত যুবকের নাম মাইকেল আলেকজান্ডার গ্লস। মাত্র ২১ বছর বয়সী এই তরুণ চলতি এপ্রিলের শুরুতে ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর পক্ষে লড়াই করার সময় নিহত হন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মাইকেলের মা জুলিয়েন গ্যালিনা ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিআইএর ডিজিটাল উদ্ভাবন বিভাগের উপপরিচালক নিযুক্ত হন। মাইকেলের বাবা-মা দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তবে তাদের সন্তানের রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ মহলেও বড় ধরনের আলোড়ন তুলেছে।
তদন্ত সংস্থা আই-স্টোরিজের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মাইকেল রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করেন। প্রশিক্ষণের জন্য তাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয় এবং পরে ইউক্রেনের সোলেদার শহরের কাছাকাছি ফ্রন্টলাইনে মোতায়েন করা হয়। আই-স্টোরিজের তথ্যমতে, মাইকেল মূলত নেপালি সৈন্যদের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং রাশিয়ার একটি অ্যাসল্ট ব্যাটালিয়নে যুক্ত ছিলেন।
পারিবারিক শোকবার্তায় জানানো হয়, মাইকেল ৪ এপ্রিল পূর্ব ইউরোপে মারা যান। তবে তার মৃত্যু কোথায়, কীভাবে ঘটেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। এমনকি রাশিয়া বা ইউক্রেন, কোনো পক্ষই এই মৃত্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সিআইএর পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে মাইকেল ছিলেন পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার কর্মী। তিনি ‘রেইনবো ফ্যামিলি’ নামের একটি বামপন্থী পরিবেশবাদী গোষ্ঠীতে যুক্ত ছিলেন। ২০২৩ সালে তুরস্কের ভূমিকম্পের পর ত্রাণ সহায়তায়ও অংশ নেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তিনি। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের পতাকার ছবি ছিল এবং তিনি নিজেকে 'বহু মেরুকরণের বিশ্ব'র সমর্থক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
পরিচিতজনরা জানিয়েছেন, তুরস্কে অবস্থানকালে মাইকেল রাশিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করেন। রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর দ্রুত সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি যুদ্ধ করতে চাননি, বরং রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন।
মাইকেলের মৃত্যুর খবর তার পরিবারকে জানানো হলেও, কীভাবে বা কোথায় তিনি মারা গেছেন সে বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। আই-স্টোরিজের রিপোর্ট বলছে, মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মাইকেল যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচক ছিলেন এবং বিশ্বাস করতেন তিনি যে পথে যাচ্ছেন তা ন্যায্যতার পথ।
এসএস//