চলতি গরমে লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় থাকবে : বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৩৬ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ শনিবার | আপডেট: ০৫:৫০ পিএম, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ শনিবার

চলতি গরম মৌসুমে লোডশেডিং পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব না হলেও তা সহনীয় মাত্রায় রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফয়জুল কবির খান।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে 'এনার্জি ক্রাইসিস: ওয়ে ফরওয়ার্ড' শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, "লোডশেডিং পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না, তবে শহর ও গ্রামের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না।"
তিনি জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছালেও ১৮,০০০ মেগাওয়াট লক্ষ্য পূরণে কাজ চলছে। এজন্য অতিরিক্ত এলএনজি ও কয়লা আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে জ্বালানি তেলের ব্যবহারও সীমিত রাখা হবে।
উপদেষ্টা ফয়জুল কবির খান বলেন, "আমরা চেষ্টা করছি জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে। তবে বড় কোনো পাওয়ার প্ল্যান্ট হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে সাময়িক সমস্যা হতে পারে।" তিনি আরও বলেন, সংকটের সুযোগ নিয়ে রাজনীতি না করে বাস্তবতা মেনে পরিকল্পনা করতে হবে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম, ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। সভাপতিত্ব করেন এফইআরবি'র মো. শামীম জাহাঙ্গীর।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, "দেশে গ্যাস সংকট বাড়ছে। ২০৩১ সালের মধ্যে নিজস্ব গ্যাস রিজার্ভ শেষ হয়ে যাবে। এখনই অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়াতে হবে।"
ড. ইজাজের মতে, বিদ্যমান গ্যাস উৎপাদন সক্ষমতা তিন গুণ বাড়ানো জরুরি। এজন্য আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে কাজের সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মত দেন তিনি।
সিপিডির খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, "দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নীতির সংস্কার এখন সময়ের দাবি। এলএনজি আমদানি বাড়াতে গিয়ে যেন দেশের নিজস্ব গ্যাস সম্পদ অবহেলিত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।"
তিনি জোর দেন গ্যাস খাতে বিশেষ বিনিয়োগ পরিকল্পনার ওপর এবং বলেন, বর্তমান সংকট মোকাবেলায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদী আর্থিক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা (ফাইন্যান্সিয়াল রিকভারি প্ল্যান) নেওয়া উচিত।
অল্প মেয়াদি করণীয় হিসেবে তিনি এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশন টার্মিনাল স্থাপন, এলপিজি বিতরণ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, কয়লা খনি ব্যবস্থাপনা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করার সুপারিশ করেন।
এসএস//