তাইজুল-মিরাজের স্পিন তাণ্ডবে দাপুটে জয় বাংলাদেশের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২৮ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ বুধবার

চট্টগ্রামে যেন মেহেদী হাসান মিরাজ নামের জাদুকরের শো! ব্যাটে সেঞ্চুরি, বল হাতে ফাইফার এই অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তিন দিনেই জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় স্বাগতিকরা (১-১)। একই সঙ্গে ঘরের মাঠে টানা ৬ টেস্টে হারের বৃত্ত ভেঙে বিজয়ের হাসি হাসল টাইগাররা।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টেস্টে টস জিতে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে করে ২২৭ রান। জবাবে বাংলাদেশ দুই সেঞ্চুরির সুবাদে গড়ে ৪৪৪ রানের পাহাড়। এরপর ২১৭ রানে পিছিয়ে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১১১ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।
বড় লিড মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে চাপেই যেন শেষ জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডার! বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ইনিংস ওপেন করেন তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট পাওয়া এই বাঁহাতি স্পিনারেই নতুন বলে ভরসা রাখেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন তাইজুল।
ইনিংসের ৭ম ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন তাইজুল। এই স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন ব্রায়ান বেনেট। তবে আউট সাইড এজে বল চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা সাদমান ইসলাম সহজেই তালুবন্দি করেন। ৬ রান করে এই ওপেনার ফেরায় ৮ রানেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
দুই বল পরই রোডেশিয়ান শিবিরে আবারো আঘাত হানেন তাইজুল। এবার তার শিকার নিক ওয়েলচ। এই টপঅর্ডার ব্যাটারকে রীতিমতো বোকা বানিয়েছেন তাইজুল। বাইরে দিয়ে বের হয়ে যাবে ভেবে বল ছেড়ে দিয়েছিলেন, তবে আঘাত হানে তার প্যাডে। এতে লেগ বিফোরের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ, তাতে সিদ্ধান্ত বদলে যায়। ২ বল খেলে ডাক খেয়েছেন ওয়েলচ।
১১তম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন নাঈম ইসলাম। এই অফ স্পিনারের টার্ন পড়তে পারেননি শন উইলিয়ামস। আউট সাইড এজে বল চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা সাদমান এবারও দুর্দান্ত ক্যাচ নেন। ১৭ বল খেলে ৭ রানের বেশি করতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। উইলিয়ামস দ্রুত ফেরায় ২২ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর ক্রেগ আরভিন ও বেন কারান মিলে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন। বড় হতে যাওয়া সেই জুটি ভেঙেছেন মিরাজ। আরভিনকে ৩০তম ওভারের প্রথম বলে এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে বোল্ড করেন মিরাজ। একই ওভারের শেষ বলে ওয়েসলি মাদেভারেকেও সাজঘরে ফিরিয়েছেন এই অফ স্পিনার।
নিজের পরের ওভারে ফিরেও উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। তাফাদা সিগা এনামুল বিজয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বল হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন মিরাজ। এরপর ওয়েলিংটন মাসাকাদজা এবং বেন কারানকে ফিরিয়ে ইনিংসে ফাইফার পূরণ করেন মিরাজ। তাতে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ফাইফারের কৃতিত্ব দেখান এই অলরাউন্ডার।
শেষ দিকেলে বোলিংয়ে ফিরে জিম্বাবুয়ের লেজ ছাঁটাইয়ে যোগ দেন তাইজুলও। ৪৩তম ওভারে রিচার্ড এনগারাভাকে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। শেষ ব্যাটার হিসেবে রান আউট হয়েছে মাসাকেসা।
সবমিলিয়ে ম্যাচে ৯ উইকেট শিকার করেছেন তাইজুল। আরেক স্পিনার মিরাজে পেয়েছেন ৫ উইকেট। এ ছাড়া নাঈম হাসান পেয়েছেন ৩ উইকেট।
এমবি//