মণিপুর রাজ্যের ভিডিওকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্ঠীর বলে প্রচার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৪৯ পিএম, ৫ মে ২০২৫ সোমবার | আপডেট: ০৩:৫১ পিএম, ৫ মে ২০২৫ সোমবার

সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে সামরিক পোশাক পরিহিত কিছু সশস্ত্র ব্যক্তিকে দেখা যায়। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি পার্বত্য চট্টগ্রামের নয় বরং ভারতের মণিপুর রাজ্যের কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর বিরোধ–সংক্রান্ত একটি ভিডিও।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলের বাসিন্দা ‘Thangjam Chingsangngakpa’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪৬ মিনিটে ভিডিওটির দীর্ঘ সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত পোস্টের প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে ‘Eshita Angom’ নামের আরেকটি ভারতীয় ফেসবুক প্রোফাইল থেকেও একই ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওটির মেইতেই ভাষার ক্যাপশন অনুবাদ করে জানা যায়, সেখানে লেখা হয়েছে, ‘যদি কুকি মিলিট্যান্টরা আক্রমণ চালায়, তাহলে আমরা মেইতেইরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।’
ইশিতা অংগমের ফেসবুক প্রোফাইল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সেখান থেকে নিয়মিতভাবে মণিপুরের মেইতেই গোষ্ঠীর পক্ষে বিভিন্ন পোস্ট করা হয়।
এসব তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতীয়মান হয়, এটি ভারতের মণিপুর রাজ্যের কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর বিরোধ–সংক্রান্ত ভিডিও।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্ক গ্রুপ ফর ইন্ডিজেনাস অ্যাফেয়ার্স (আইডাব্লিউজিআইএ)-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩ মে। ওই দিন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মণিপুর (এটিএসইউএম) তফশিলি উপজাতির তালিকায় মেইতেইদের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ দ্রুত পাঠানোর বিষয়ে আদালতের নির্দেশের প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মিছিল করে। মিছিলের পরই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
আদালতের ১৯ এপ্রিলের আদেশে রাজ্য সরকারকে বলা হয়, ২০১৩ সালের একটি চিঠির জবাবে চার সপ্তাহের মধ্যে আবেদনকারীদের দাবিদাওয়া যথাযোগ্য গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে রাজ্যের অবস্থান জানাতে। প্রায় একদশক ধরে ঝুলে থাকা এই মামলার রায়ই সংঘাতের সূচনা করে।
২০২৩ সালের ০৪ মে ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা সংস্করণে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
সুতরাং, ভারতের মণিপুর রাজ্যের একটি ভিডিওকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্টীর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।
রিউমার স্ক্যানার জানায়, গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এএইচ