ঢাকা, বুধবার   ১৮ জুন ২০২৫,   আষাঢ় ৪ ১৪৩২

ভারত-পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩৮ পিএম, ৭ মে ২০২৫ বুধবার

কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার পর দুই সপ্তাহ ধরে চলা উত্তেজনার অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে সরাসরি সামরিক সংঘাতে রূপ নিয়েছে । ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামক বিমান অভিযানে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়, যার জবাবে দ্রুতই পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। এই পাল্টাপাল্টি হামলা দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই বলে বিবেচিত হচ্ছে।

ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৯টি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ ধ্বংস করা হয়েছে, নিহত হয়েছেন অন্তত ৭০ জন ‘সন্ত্রাসী’ এবং আহত হয়েছেন আরও ৬০ জন। কিন্তু পাকিস্তান বলছে, এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৪৬ জন।

পাকিস্তান অভিযোগ করেছে, ভারতের হামলার বেশিরভাগই মসজিদ লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। জিও নিউজ জানায়, বাহাওয়ালপুরের মসজিদে সুবহানাল্লাহতে নিহত হন ১৩ জন, যাদের মধ্যে শিশুসহ বহু নারী রয়েছেন। মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য ও তার ৪ সহযোগীও নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে জয়শ-ই-মোহাম্মদ। মুজাফফরাবাদ, কোটলি ও মুরিদকেও লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে, যেখানে নারী-শিশুসহ আরও বেশ কয়েকজন নিহত বা আহত হয়েছেন। এছাড়া নীলম-ঝিলাম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নোসেরি বাঁধেও আঘাত লেগেছে।

পাল্টা হামলায় পাকিস্তানও ভারতের ক্ষয়ক্ষতির খবর জানিয়েছে। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে জম্মু-কাশ্মীরে দুই শিশুসহ অন্তত ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৮ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, তারা ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। ধ্বংস হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাধিক ব্রিগেড সদর দফতর ও চেকপোস্ট।

পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফায়েল, একটি এসইউ-৩০ এমকেআই এবং একটি মিগ-২৯। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমও নিশ্চিত করেছে, অন্তত তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে ভারতের ভূখণ্ডে।

পাকিস্তানের দাবি, এই প্রতিক্রিয়া ছিল আত্মরক্ষামূলক, তবে সংঘাত আরও বিস্তৃত আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এলওসি বরাবর এখনও গোলাগুলি চলছে বলে জানায় ইসলামাবাদ। এই সংঘর্ষে এ পর্যন্ত উভয় পক্ষেই ব্যাপক মানবিক ও সামরিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। 

এসএস//