ঢাকা, রবিবার   ১৮ মে ২০২৫,   জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩২

জুলকারনাইন সায়েরের পোস্টে ‘স্যাড’ রিয়েক্ট, পাঁচ কর্মকর্তাকে শোকজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৩৩ পিএম, ১৭ মে ২০২৫ শনিবার

অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের গত ১৪ এপ্রিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেনকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে ‘স্যাড’ রিয়েক্ট দেওয়ার কারণে এবার শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) পেলেন একই মন্ত্রণালয়ের পাঁচ কর্মকর্তা।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আব্দুর রউফ গত ৪ মে ওই কর্মকর্তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।

কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া মৎস্য অধিদপ্তরের পাঁচ কর্মকর্তা হচ্ছেন—

১. অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এএসএম সানোয়ার রাসেল,

২. সহকারী প্রধান আবু মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান,

৩. ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক মো. ফরিদ হোসেন,

৪. মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. সালমুন হাসান বিপ্লব এবং

৫. ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান।

ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ স্বাক্ষরিত ৪ মে জারি করা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জনাব মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিবকে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে পদায়নের জন্য জনাব ফরিদা আখতার, মাননীয় উপদেষ্টা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর যথাযথ প্রক্রিয়ায় একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। উক্ত পত্রটি একজন আন্তর্জাতিক প্রবাসী সাংবাদিক জনাব Zulkarnain Saer তার ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করেন। আপনি জনাব এ, এস, এম সানোয়ার রাসেল, সহকারী পরিচালক, মৎস্য অধিদপ্তর, মৎস্য ভবন, রমনা, ঢাকা উক্ত ফেইসবুক পোস্টে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ০৭ মে ২০২০ তারিখের ০৫.০০,০০০০,১৭৩.০৮.০১৪.০৭-১৩৬ সংখ্যক পরিপত্রের (জ) অনুযায়ী কোন রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা রয়েছে। আপনি উক্ত নির্দেশনা অমান্য করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বরত কর্মকর্তা সম্পর্কে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ এর পরিপন্থী। উল্লেখ্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ২৭/০৪/২০২৫ তারিখের মাসিক সমন্বয় সভার কার্যপত্রের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনার বিরুদ্ধে এহেন কর্মকান্ডের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা রয়েছে।

এমতাবস্থায়, এহেন আচরনের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার সন্তোষজনক জবাব আগামী ০৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রেরণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
 
এর আগে ফেসবুক পোস্টে জুলকারনাইন সায়ের লিখেছিলেন, তোফাজ্জেল হোসেন (অতিরিক্ত সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়)। যিনি দুই দফায় (একান্ত সচিব স্বাস্থ্যমন্ত্রী- ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল ও একান্ত সচিব পানি সম্পদ মন্ত্রী- ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল) দুজন আওয়ামী মন্ত্রীর পিএস ছিলেন (৬ বছর)। তাকেই সচিব পদে পদোন্নতি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বানানোর জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি আরও অনুরোধ করেছেন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সময় লাগলে অন্য কাউকে পদায়ন না করে এই তোফাজ্জলকেই এ পদে রাখার জন্যে।

এসএস//