ইসরায়েলে রাতভর মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১৪ এএম, ১৭ জুন ২০২৫ মঙ্গলবার

ইসরায়েলের দিকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। তেহরানের মুহুর্মুহ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, অপরদিকে তা ঠেকাতে সক্রিয় ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ জুন) রাতে এমনই ছিল তেল আবিবের আকাশ। যদিও ইরানি গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, আইরন ডোম হ্যাকের কারণে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। ধ্বংস হয়েছে হাইফার তেল পরিশোধনাগার। অপরদিকে তেহরানে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলা চালায় ইসরাইল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এই হামলার কথা জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
আইডিএফ বলছে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে জরুরি সতর্ক সংকেত হিসেবে সাইরেনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।
আল জাজিরার খবর বলছে, বন্দর নগরী হাইফাতেও সাইরেন বাজতে শোনা গেছে। হাইফায় চারদিনে বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে তিনজন নিহত হয়েছে। হাইফার তেল পরিশোধনাগার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রাতে তেল আবিব, জেরুজালেম, হাইফাসহ ইসরাইলের বিভিন্ন এলাকায় বেজে ওঠে সাইরেন। এরপরই খবর পাওয়া যায়, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হাইফার বৃহৎ তেল পরিশোধনাগার স্থাপনাটি ধ্বংস হয়ে গেছে।
শোধনাগার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাজান গ্রুপ জানিয়েছে, হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন এবং সব অবকাঠামোর কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। একই সময়ে বিয়ার শেভা এলাকার ডিমোনা পারমাণবিক কেন্দ্রও লক্ষবস্তু বানায় তেহরান।
এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আইআরআইবির সরাসরি সংবাদ প্রচারের সময় হামলা চালায় ইসরাইল। বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সংবাদ উপস্থাপিকা। আগুন ধরে যায় পুরো ভবনে। এরপরেই মূলত হামলার হুমকি দিয়ে ইসরাইলের দুটি টেলিভিশন চ্যানেলের কর্মী ও তেল আবিবের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেয় তেহরান।
রাতভর ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ঠেকাতে ইসরাইল নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখে। তবে একটি প্রতিরক্ষা মিসাইল উড্ডয়নের আগেই লুটিয়ে পড়ে তেল আবিবের মাটিতে। এতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক আরও ছড়িয়ে পড়ে। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আই.আর.এন.এ’তে দাবি করা হয়েছে, ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মূলত হ্যাক হয়েছিল। এ কারণেই তা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। তাবরিজ শহরে ইসরাইলের এফ-থার্টি ফাইভ যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের দাবিও করেছে ইরান।
এদিকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনিকে হত্যার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, খামেনিকে হত্যা করা হলে যুদ্ধ বিস্তৃত হবে না বরং সংঘাত বন্ধ হবে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া পোস্টে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ইরান শিগগিরই পারমাণবিক চুক্তি না করলে বাসিন্দাদের তেহরান ত্যাগ করা উচিত।
আর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ পরিধি বাড়াতে চায় না ইরান। তবে যেকোনো আক্রমণের পাল্টা জবাব দেয়া হবে। আর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইসরাইলের হামলা কূটনীতির জন্য একটি বড় আঘাত।
এমবি//