হোলি আর্টিজানে হামলা
সাত আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫২ এএম, ১৮ জুন ২০২৫ বুধবার

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার প্রায় নয় বছর পর এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। এতে সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) হাইকোর্টের ২২৯ পৃষ্ঠার এই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন।
রায়ে আদালত বলেন, হামলাটি ছিল নির্মম, নৃশংস ও জঘন্য। জঙ্গিদের আচরণ, ঘটনাস্থলে তাদের বর্বরতা এবং এর ফলে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ক্ষতি বিবেচনায় এই সাজা দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র যাবজ্জীবন নয়, বরং আমৃত্যু কারাদণ্ডই এই অপরাধের জন্য উপযুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলেন রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধি, আসলাম হোসেন, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ।
এ মামলায় ছয় বছর আগে দেয়া বিচারিক আদালতের রায়ে সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছিল। মামলাটির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন।
বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো উল্লেখ করে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, এ ক্ষেত্রে আলোচ্য হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনার ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আপিলকারী আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালানো হয়। দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে এবং কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইতালির নাগরিক নয়জন, জাপানের সাতজন, ভারতের একজন ও বাংলাদেশি তিনজন ছিলেন। আর সেই রাতে জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান চালাতে গিয়ে বোমা হামলায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দেন।
এমবি//