ময়মনসিংহে দুই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:৪৭ এএম, ২১ জুন ২০২৫ শনিবার | আপডেট: ০৮:৫৬ এএম, ২১ জুন ২০২৫ শনিবার

ময়মনসিংহের ফুলপুর ও তারাকান্দায় পৃথক দুই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
শুক্রবার বিকালে ও রাতে এই দুই দুর্ঘটনা ঘটে।
এর মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলপুরে যাত্রীবাহী মাহেন্দ্রে বাসের ধাক্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া তারাকান্দায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংর্ঘষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনজনে। এ নিয়ে জেলায় পৃথক দুই সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১১ জন নিহত হয়েছেন।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ সড়কের ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা ইন্দিরারপার এলাকায় যাত্রীবাহী মাহেন্দ্রে বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই এক নারীসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। আহতদের মমেক হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ সরর্দার। এ ছাড়া গুরুতর আহত আরও দুইজন মমেক হাসপাতালে চিকিৎসধীন অবস্থায় মারা যান।
তাদের মধ্যে তিনজন ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে ফরিদ মিয়া (৩৮), একই উপজেলার মিশুনীয়াকান্দা গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে জহর আলী (৭০) ও বাট্টা গ্রামের আব্দুল কদ্দুছের ন্ত্রী হাসিনা খাতুন (৫০)। বাকিদের নাম পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম সীমা। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে ছয়জনের পর মমেক হাসপাতালে আরও দুইজনের মারা যান।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতে হালুয়াঘাট-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
ফুলপুর ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে মমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মমেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিক উদ্দিন বলেন, ফুলপুরে বাস ও মাহেন্দ্র দুর্ঘটনায় মমেক হাসপাতালে আহত ছয়জন ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে হাসপাতালে আসার পরেই অজ্ঞাত একজন এবং রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে পারভেজ (৪৫) নামের মাহেন্দ্র চালক মারা যান।
এর আগে এদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারাকান্দা উপজেলার কোদালধর বাজার-সংলগ্ন হিমালয় ফিলিং স্টেশনের সামনে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলেই আটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হন।
এ ঘটনায় আহত অটোরিকশার চালকসহ আরও তিন যাত্রীকে মমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মমেক হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মারা যান সদর উপজেলার ১ নম্বর ঘাগড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. কোরবান আলীর ছেলে অটোরিকশাচালক মো. আলম (৪০)। এ নিয়ে তারাকান্দা দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনজনে। নিহত অপর দু’জন হলেন ধোবাউড়ার বরাটিয়া গ্রামের জবেদা খাতুন (৮৫), ফুলপুরের মদীপুর সুতারপাড়া এলাকার রাকিবুল হাসান (১৫)।
এদিকে পৃথক দুই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলে এবং রাতেই ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম। তিনি বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক দুটি ঘটনারই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুর্ঘটনার শিকার সিএনটি অটোরিকশা, বাস এবং যানগুলোর দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অবস্থা দেখে মনে হয়েছে বেপরোয়া গতিই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এএইচ