ভোলায় গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রদল-শ্রমিক দলের ৩ নেতা বহিষ্কার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৮ পিএম, ২ জুলাই ২০২৫ বুধবার

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার মাওলানাকান্দি গ্রামে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের তিন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। সোমবার (১ জুলাই) রাতে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা চাঁদার দাবিতে ভুক্তভোগীর স্বামীকে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর তৎপর অভিযান চালিয়ে ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে মামলার অন্যতম আসামি মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত আলী খান।
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। তবে এই কর্মসূচিতে বিএনপির বর্তমান ও সাবেক উপজেলা কমিটির সমর্থকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ দেখা দিলে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার (৩ জুলাই) দলের মিডিয়া সেলের মাধ্যমে এক বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “ভোলায় চাঁদার দাবিতে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করার ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি। এ ধরনের বর্বর ও কাপুরুষোচিত ঘটনায় গোটা জাতি হতভম্ব।”
তিনি আরও বলেন, “দুস্কৃতিকারীদের দ্বারা সংঘটিত এসব পাশবিক নির্যাতন নারীর নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাই এদের কঠোর হস্তে দমন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্ত হলেও দেশ এখনো পুরোপুরি নিরাপদ নয় বলেই এমন ঘটনা ঘটছে। নারীর ওপর ধারাবাহিক নির্যাতন বন্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।”
এদিকে জামায়াতে ইসলামী তজুমদ্দিন উপজেলা শাখাও বুধবার বিকেলে একটি প্রতিবাদ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আয়োজন করে। সমাবেশে নেতারা বলেন, “ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির মতো নৃশংস ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া চলবে না। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যারা এ ধরনের ঘটনার প্রশ্রয় দেয়, জনগণ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।”
প্রসঙ্গত, ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বসতঘরে ছিলেন। সে সময় দুর্বৃত্তরা হানা দিয়ে তাকে বেঁধে রাখে এবং স্ত্রীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী ও সামাজিক সংগঠনগুলো প্রতিবাদে ফেটে পড়ে।