সালথায় পানির সংকটে সোনালী আঁশ, বিপাকে পাটচাষিরা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:০৯ পিএম, ৬ জুলাই ২০২৫ রবিবার

ফরিদপুরের সালথায় শুরু হয়েছে সোনালী আঁশ পাট কাটার মৌসুম। মাঠজুড়ে চলছে কাটাকুটি আর আঁশ ছাড়ানোর তোড়জোড়। কিন্তু খালে-বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়ার উপযোগী স্থান মিলছে না, ফলে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। রাস্তার ধারে কিংবা পুকুরে মাটি দিয়ে কোনোভাবে পাট জাগ দেওয়া হচ্ছে, তবে এতে আঁশের মান আশানুরূপ হচ্ছে না।
বিকল্প না পেয়ে কেউ কেউ ভ্যানে বা নছিমনে পাট বহন করে কুমার নদে নিয়ে জাগ দিচ্ছেন। এতে শ্রম ও পরিবহন খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি সময়ও লাগছে বেশি। তাতে আবার জলবদ্ধ পাটের রং ও মান খারাপ হয়ে যাচ্ছে—চাষিদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়ছে।
চাষিদের দাবি, পাটের ন্যায্য দাম নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। বীজ, জৈব ও রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং শ্রমিকদের মজুরির মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তারা সরকারের কাছে বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম কমানোর সহ ফরিদপুর স্লুইচগেইট খুলে দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন সালথার চাষিরা।
তরুন পাটচাষি নয়ন কান্ত জানান, আমাদের আটঘর ইউনিয়নের মাঠে-ঘাটে কোথাও পানি নেই। পাট কেটে জাগ দিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ফরিদপুর স্লুইচগেটের অপরপাশে পানি বাড়ছে, তাই স্লুইচগেট খুলে দিলে আমরা পানি পেতাম।
পাট চাষি জয়নাল হোসেন জানান, খালে-বিলে, নদী-নালায়, পুকুরে পানি নেই; পাট জাগ দেবো কোথায়? ভালো পানি না হলে পাটের রং ভালো হবে না। আমাদের দাবি, পানির জন্য যেন স্লুইচগেইট খুলে দেওয়া হয়।
উপজেলার আরেক পাট চাষি লোকমান মোল্যা জানান, বৃষ্টিতে পাটের খেতে ছিলছিলে পানি হয়েছে, এতে পাটের গোড়া নষ্ট হয়ে গেছে। খেতে বেশি পানি হলে পাটের গোড়া পঁচন ধরতো না। খেতের পাট খেতেই জাগ দেওয়া যেত। এখন নছিমন ও ভ্যানে করে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি, পাট জাগ দিতে। পানির অভাবে পাটের কালার খারাপ হচ্ছে, দামও কম পাবো। সব মিলিয়ে চিন্তায় আছি।
ফরিদপুর সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন সিকদার জানান, এবছর সালথায় ১৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে পাট ক্ষেতে পানি জমে পাটের গোড়া পচন ধরেছে। এখন যারা পাট কাটবে তাদের ফলন ভালো হবে।
তিনি আরো জানান, পানি না থাকায় পাট পঁচনে সমস্যা হচ্ছে পাট চাষিদের, এতে পাটের কালার খারাপ হতে পারে। ফরিদপুরের স্লুইচগেইট যাতে খুলে দেয়, সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি।