সহায়তার শর্তে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে ক্ষমা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৫০ পিএম, ১২ জুলাই ২০২৫ শনিবার

জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে সম্মত হওয়ায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমা করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে এই ক্ষমা কার্যকর হবে শুধুমাত্র তিনি যদি আদালতে সম্পূর্ণ সত্য উন্মোচন করে অপরাধের পেছনের বাস্তবতা এবং সংশ্লিষ্টদের নাম প্রকাশ করেন।
শনিবার (১২ জুলাই) ট্রাইব্যুনালের লিখিত আদেশ প্রকাশ করা হয়, যা ১০ জুলাই দেওয়া হয়েছিল। এতে বলা হয়, চৌধুরী মামুনের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ও প্রসিকিউটরের সম্মতিতে তাকে ক্ষমা দেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, মামুন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন এবং আদালতের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি তার জানা মতে আন্দোলনকালীন সব অপরাধ, পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারীদের নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য দেবেন। এই সহযোগিতা বিচারকাজে সহায়ক হবে বলে মনে করছে ট্রাইব্যুনাল।
তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে না রেখে পৃথকভাবে রাখার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
চৌধুরী মামুনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জায়েদ বিন আমজাদ গণমাধ্যমকে জানান, “এটি শর্তসাপেক্ষ ক্ষমা। যদি তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে আদালতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন, তাহলেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।”
এর আগে ১০ জুলাই আদালতে নিজেকে দোষী ঘোষণা করে মামুন বলেন, “জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে হত্যা ও গণহত্যার যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য। আমি রাজসাক্ষী হয়ে সব তথ্য আদালতে দিতে প্রস্তুত।”
উল্লেখ্য, মামুনসহ তিনজন—শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশপ্রধান মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩-এর বিভিন্ন ধারায় পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। মামুন বর্তমানে কারাগারে থাকলেও অন্য দুই অভিযুক্ত পলাতক।
এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মামুনের স্বীকারোক্তি ও সাক্ষ্য আদালতে প্রমাণিত হলে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নতুন মোড় নিতে পারে।