ঢাকা, রবিবার   ১৩ জুলাই ২০২৫,   আষাঢ় ২৯ ১৪৩২

ইতিহাস গড়ে উইম্বলডনের নতুন রানি সিওনতেক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫৩ এএম, ১৩ জুলাই ২০২৫ রবিবার

প্রথমবারের মতো উইম্বলডনের ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়লেন পোল্যান্ডের ইগা সিওনতেক। তবে শুধুই ইতিহাস নয়, সিওনতেক গড়েছেন দাপটের নতুন এক নজির। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামান্ডা আনিসিমোভাকে ৬-০, ৬-০ গেমে হারিয়েছেন সিওনতেক। ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে তিনি প্রতিপক্ষকে ‘ডাবল ব্যাগেল’ উপহার দিয়ে ট্রফি জিতলেন।

শনিবার সেন্টার কোর্টে উইম্বলডনের মেয়েদের এককে মাত্র ৫৭ মিনিটে জয় তুলে নেন সিওনতেক। পুরো ম্যাচে প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগই দেননি ২৪ বছর বয়সী এই পোলিশ তারকা।

এই জয়ের মধ্য দিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যামে নিজের ১০০তম জয় তুলে নেন সিওনতেক। এটি তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি—আগের চারটি এসেছে ফরাসি ওপেন থেকে, একটি ইউএস ওপেন। আর এবার প্রথমবারের মতো উইম্বলডনের মুকুট উঠল তার মাথায়।

একই সঙ্গে তিনি হয়ে গেলেন উইম্বলডনের একক শিরোপা জয়ী প্রথম পোলিশ খেলোয়াড়।

তবে অ্যামান্ডা অ্যানিসিমোভা অবশ্য এখানেই থামার গল্প নন। বাবাকে হারানো, মানসিক অবসাদে টেনিস থেকে বিরতি নেওয়ার পর ৪০০ র‍্যাঙ্কিংয়ের বাইরে ছিটকে পড়া অ্যানিসিমোভা গত বছর আবার ফিরে আসেন কোর্টে। উইম্বলডনে এসেছিলেন ১৩তম বাছাই হিসেবে।

কিন্তু একের পর এক চমক দেখিয়ে সেমিফাইনালে হারিয়েছেন র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা আরিনা সাবালেঙ্কাকে। ফাইনাল পর্যন্ত সেই গল্পটা ছিল রূপকথার মতোই, যতক্ষণ না সিওনতেক নামলেন কোর্টে।

সিওনতেকের এমন জয় অনেককে ফিরিয়ে নিয়েছে ৩৭ বছর পেছনে। ১৯৮৮ সালের ফরাসি ওপেনের ফাইনালে ঠিক এমনভাবেই মাত্র ৩৪ মিনিটে ৬-০, ৬-০ গেমে জয় পেয়েছিলেন জার্মান কিংবদন্তি স্টেফি গ্রাফ। ওপেন যুগে এটি ছিল গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে দ্বিতীয়বারের মতো এমন স্কোরলাইন।

এই জয়ের পর গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে সিওনতেকের রেকর্ড দাঁড়াল ৬–০। অর্থাৎ, যতবার ফাইনালে উঠেছেন ততবারই জিতেছেন।

উইম্বলডনের মুকুট মাথায় তুলে সিওনতেক নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না এমন দাপুটে পারফরম্যান্সে জয়ের গল্প। বললেন, ‘খুবই অবাস্তব লাগছে। এমন কিছু নিয়ে কখনও স্বপ্ন দেখিনি। আগের গ্র্যান্ড স্ল্যামগুলো জিতে নিজেকে অভিজ্ঞ মনে হতো, কিন্তু এভাবে জিতব, সেটা ভাবিনি।’

বিজয়ের উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে যেতে প্রতিপক্ষকেও মনে রেখেছেন সিওনতেক। তিনি বলেন, ‘অ্যামান্ডা দারুণ দুই সপ্তাহ কাটিয়েছে। আমি তাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। তুমি যেভাবে খেলেছ, তা নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত। আশা করি, সামনে আরও ফাইনালে আমরা মুখোমুখি হব।’

অন্যদিকে, ফেভারিট আরিয়ানা সাবালেঙ্কাকে সেমিফাইনালে হারানো অ্যামান্ডা ফাইনালে হেরে কেঁদেকেটে একাকার হয়েছেন। পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে ২৩ বছর বয়সী মার্কিন তারকা বলেন, ‘এখানে আসার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। উড়তে পারবেন না—এমন সংস্কার ঝেঁটিয়ে বিদায় করার জন্যও ধন্যবাদ। আমি অবশ্য এসব কারণে আজ হারিনি! আমি জানি আজ বেশি কিছু করতে পারিনি। তবে পরিশ্রম করে যাব। আশা করছি, কোনো একদিন আবারও ফিরতে পারব এখানে।’

এএইচ